দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দেশের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন আজীবন। তার ইচ্ছা ছিল লিভার, কর্নিয়া এসব যদি অন্য কোনো মানুষের কাজে লাগে তাহলে সেগুলো যেন মানুষের মধ্যে দান করে দেওয়া হয়।

কিন্তু বয়স হয়ে যাবার কারণে বিজ্ঞানসম্মতভাবে এসব অন্য কারো কাজে লাগার মত অবস্থায় নেই। শুধু মাত্র মেডিকেল প্রাকটিস ছাড়া কোনো কাজে আসবে না। আর এদিকে ডা. জাফরুল্লাহর পরিবারের যেসব সদস্য তার দেহ দানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তাদের বেশির ভাগই চাচ্ছেন সাভারে তাকে দাফন করতে। যদিও এবিষয়ে পরিবারের সবাই এক মত হয়ে একটি সিদ্ধান্ত জানাবে বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল)।বুধবার (১২ এপ্রিল) গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফরেনসিক মেডিসিন অ্যান্ড টক্সিকলজি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ শওকত আলী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ডা. জাফরুল্লাহর দেহ দানের বিষয়টা আসলে এতটা কন্ট্রোভার্সির কিছু না। তার পরিবারের স্ত্রীর পক্ষ এবং ভাই-বোনদের পক্ষ থেকে দুইটি সিদ্ধান্ত এসেছে। একটি হচ্ছে দেহ দান আর অন্যটি হচ্ছে সাভারে দাফন করা। কিন্তু আমরা কথা বলে দেখেছি মেজরিটি সাভারে দাফন করতে এক মত হয়েছেন। এ ইস্যুতে তাদের (পরিবারের সবার যারা সিদ্ধান্ত নেবার) মধ্যে এখনো আলোচনা শেষ হয়নি। সেই আলোচনা এখনো চলছে। যা আগামীকালের মধ্যে আমাদের জানিয়ে দেবে। তবে যা সিদ্ধান্ত হবে কারো মতের বিরুদ্ধে নয়। সবাইকে সম্মতি করিয়েই হবে।

তিনি আরও বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী চেয়েছিল যে ওনার লিভার, কর্নিয়া এসব যদি কোনো কাজে লাগে তাহলে সেগুলো যেন মানুষের মধ্যে দান করে দেওয়া হয়। তবে ওনার যে বয়স তাতে এসব অঙ্গ অন্য মানুষের কাজে লাগবার মতো অবস্থায় নেই বা বিজ্ঞান সম্মত না। তবে উনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যদি কোনো কাজে লাগানো যায়।

অধ্যাপক মোহাম্মদ শওকত আলী বলেন, তবে আরেকটা বিষয় হচ্ছে তার বডি মেডিকেল প্রাকটিসে কাজে লাগানো যায় কিনা। আর যদি কাজে লাগেও তাহলে সেটা বেনিফিট হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আগামীকাল পর্যন্ত সময় লাগবে। কারণ এ বিষয়টা মূলত এনাটমি ডিপার্টমেন্ট দেখে থাকে।

প্রসঙ্গত, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ১ম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুর ২টার ৩০ মিনিটে। এর আগে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কেন্দ্ৰীয় শহীদ মিনারে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে। একই স্থানে রাষ্ট্রীয়ভাবে শ্রদ্ধা জানানো হবে।

এছাড়া শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় সাভার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে শ্রদ্ধা নিবেদন। বাদ জুমা সেখানে ২য় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।