প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত মমতার : বিজেপি নেতা
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: সম্প্রতি নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছিলেন, ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
এবার অমর্ত্যের সুরে সুর মেলালেন তামিলনাড়ুর বিজেপি নেতা সাবেক রাজ্যসভার সংসদ সদস্য সুব্রহ্মণ্যম স্বামী।
মমতার প্রশংসা ঝরলো এ বিজেপি নেতার কণ্ঠে। তিনি বলেছেন, আপসহীন সংগ্রামী নেত্রী মমতা। প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত তৃণমূল নেত্রীর।
কলকাতায় এসে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে এমনই সার্টিফিকেট দিয়ে গেলেন মোদিবিরোধী সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। প্রবীণ এই নেতা জানিয়েছেন, মমতার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে তার। কয়েকদিন আগেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার (৯ মে) কলকাতার এক অনুষ্ঠানে এসে সুব্রহ্মণ্যম স্বামী দাবি করেন, ভারত ধীরে ধীরে ফ্যাসিজমের দিকে এগুচ্ছে। যা প্রতিরোধ করার জন্য শক্তিশালী বিরোধীতার প্রয়োজন। আর সেটা যে মমতার নেতৃত্বেই সম্ভব।
সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর অভিমত, রাজনৈতিক মহলে আমার অনেক বন্ধু আছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের মধ্যেই একজন। আমি মনে করি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত মমতার। তৃণমূল কংগ্রেসপ্রধানের ভূয়সী প্রশংসা করে স্বামী বলেছেন, মমতার মতো লড়াকু এবং আপসহীন নেত্রী ভারতে এখন দ্বিতীয়জন নেই। পশ্চিমবঙ্গ থেকে কীভাবে দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম শাসনের পতন ঘটালেন তিনি , তা সবারই জানা। সেসময় কমিউনিস্টদের সামনে কেউ দাঁড়ানোর সাহস পেত না। কিন্তু মমতা ওদের পতন ঘটিয়ে ছেড়েছেন।
সুব্রহ্মণ্যম স্বামী জানিয়েছেন, ২০২৪ লোকসভা ভারতের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে নিয়মিত মমতার সঙ্গে তার আলোচনা হয়। এমনকি দিন দশেক আগেও সাক্ষাৎ হয়েছিল তাদের। সেই সাক্ষাতের কথা অবশ্য কেউ জানেও না বলে জানান স্বামী।
মূলত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কড়া সমালোচক সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। বিশেষকরে কেন্দ্রের অর্থনৈতিক নীতির বিরুদ্ধে বরাবরই সরব হতে দেখা গিয়েছে তাকে। যদিও একটা সময় মোদির ঘনিষ্ঠ বৃত্তের মধ্যেই ছিলেন স্বামী।
এমনকি ২০১৯ সালের নির্বাচনের পর মোদি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল তার। কিন্তু শেষমেশ মন্ত্রিসভায় স্বামীর জায়গা হয়নি। তারপর থেকেই স্বামী এখন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা হিসেবে পরিচিত। মোদির বিরুদ্ধে সুযোগ পেলে এখন কথা বলতে ছাড়েন না তিনি। পাশাপাশি মমতার সঙ্গে সম্প্রতি নৈকট্য বেড়েছে তার।
এরআগে মমতা প্রধানমন্ত্রীর দাবিদার বলে কেন্দ্র সরকারের তোপের মুখে পড়েন নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনও। গত ১৪ জানুয়ারি অমর্ত্য বলেছিলেন, এই নয় যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ্যতা নেই। অবশ্যই ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে তার। কিন্তু বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভকে তিনি কতটা টানতে পারবে সেটাই সবচেয়ে বড় বিষয়। অবশ্য এখনও সেটা দেখা যাচ্ছে না। তাকে বিজেপির দেশ বিভাজনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে হবে।
একইসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে (২০২৪), বিজেপি যদি ভাবে যে, তারা একাই খেলা দেখাবে, তবে তারা ভুল ভাবছে। বিজেপি যেটা করছে তা হলো দেশের কথা না ভেবে হিন্দুদের দিকেই বেশি ঝুঁকে রয়েছে। ফলে আগামী নির্বাচনে ভারতের কয়েকটি অঞ্চলভিত্তিক দলগুলো অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে।
৯০ বছর বয়সী অর্থনীতিবিদের এই মন্তব্যর পরই বিশ্বভারতী বিদ্যালয়ের সঙ্গে জমি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন বলে একাংশর মত। ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী হলেও আচার্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তাই এখন দেখার বিষয়, সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর মুখে মমতাকে নিয়ে এই মন্তেব্যের বিরুদ্ধে কী পাল্টা জবাব দেয় বিজেপি।