দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রিজার্ভ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিন মাসের খাদ্য কেনার মতো ডলার যেন আমাদের হাতে থাকে, সেটা নিয়েই আমাদের চিন্তা। রিজার্ভ নিয়ে কোনো চিন্তা নেই।

সোমবার বিকেলে সদ্য সমাপ্ত ত্রিদেশীয় সফর নিয়ে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা রিজার্ভ নিয়ে বলতে বলতে সবার মাথায় এটা ঢুকে গেছে। আমাদের রিজার্ভ এখনও যা আছে, তাতে অন্তত এটুকু বলতে পারি—আমাদের এমন কোনো সংকট এভাবে নেই। তবে, আমরা সবসময় রিজার্ভ ধরে রাখারই চেষ্টা করি।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠ সদস্য ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর এ ত্রিদেশীয় (জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য) সফর শুরু হয়। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে ইদিন সফরের প্রথম ধাপে টোকিও যান তিনি। চার দিনের টোকিও সফর শেষে সেখান থেকে তিনি সফরের দ্বিতীয় ধাপে ২৮ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসিতে যান। দেশটিতে প্রায় এক সপ্তাহের সফর শেষে তৃতীয় ধাপে ৪ মে লন্ডনে পৌঁছান সরকারপ্রধান। যুক্তরাজ্য সফরকালে রাজা তৃতীয় চার্লস এবং তার স্ত্রী রানি ক্যামিলার রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেন শেখ হাসিনা। লন্ডন থেকে গত ৯ মে তিনি দেশে ফেরেন।

এসময় নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কথা নাই, বার্তা নেই অমনি স্যাংশন দেয়ার ভয় দেখানো হলো। যারা আমাদের সপ্তম নৌবহর দিয়ে ভয় দেখিয়েছিল, আমরা তাও জয় করেছি। তারা স্যাংশন দেবে, এই ভয় পেলে চলবে না। আমরা কারও ওপর নির্ভর করি না। আমাদের যতটুকু আছে আমরা তা উৎপাদন করলেই হবে। আমরা কোনো জমি অনাবাদি রাখব না। আমরা উৎপাদন করতে জানি, ফসল ফলাতে জানি।

নিষেধাজ্ঞা দেয়া নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে খাদ্যপণ্য সংকট তৈরি হলে সেসব দেশেই উৎপাদন করা হবে জানান প্রধানমন্ত্রী।

আমাদের দেশের কিছু মানুষই দেশের বদনাম করে, এটাই দুর্ভাগ্য উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, রাজনীতি যখন করি বিরোধিতা করবে সমালোচনা থাকবে। ২০০৮ সালে আগে দেশ কোথায় ছিল, আমরা ক্ষমতায় আসার পরে এখন দেশ কোথায় আছে। তবে এক শ্রেণির লোকজনই থাকে সমালোচনা করার জন্য।

জাপান সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে আমি ২৫ এপ্রিল জাপানের রাজধানী টোকিও পৌঁছাই। ২৬ এপ্রিল সকালে আমি জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করি। সম্রাট আমাকে স্বাগত জানান এবং দুই দেশের সম্পর্ক আরো গভীরতর হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শেখ হাসিনা জানান, ওই দিন সন্ধ্যায় জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাকে গার্ড অব অনার দিয়ে নিজ কার্যালয়ে অভ্যর্থনা জানান। এরপর জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুই দেশের সরকারপ্রধানের মধ্যে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের অংশীদারত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাসের আমন্ত্রণে আমি ২৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছাই। যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রথম দিনে ২৯ এপ্রিল অপরাহ্ণে আমার সঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিল ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে তিনি অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যোগাযোগ স্থাপন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এবং কভিড-১৯ মহামারিকালেও বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার প্রশংসা করেন।

যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে তিনি বলেন, ব্রিটেনের মহামহিম রাজার পক্ষ থেকে তার এবং রানি ক্যামিলার রাজ্যাভিষেক ও অভ্যর্থনায় অংশগ্রহণ এবং কমনওয়েলথ সেক্রেটারি জেনারেলের পক্ষ থেকে কমনওয়েলথ লিডার্স ইভেন্টে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে আমি ৪ থেকে ৮ মে যুক্তরাজ্য সফর করি।