ইসি পোস্ট বক্স নয় যে অন্যায় হবে আর মেনে নেবে: ইসি আলমগীর
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: নির্বাচন কমিশন (ইসি) কোনো পোস্ট বক্স নয় যে, অন্যায় হবে আর তা মেনে নেবে। নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সোমবার (২২ মে) এমন মন্তব্য করেন।
অনিয়মের কারণে ভোট চালাকালীন বা ফলাফল প্রকাশের পরেও নির্বাচন বাতিল করার ক্ষেত্রে কোনো চাপ আছে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ভোটের ফল বাতিলের ক্ষেত্রে কোনো চাপে ফেলবে বলে আমরা মনে করি না। অন্যায়ভাবে একটা জিনিস (নির্বাচনী ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য) আসবে আর নির্বাচন কমিশন সেটা মেনে নেবে, এটা একটা পোস্ট বক্স না তো। এখানে যারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আছেন তারা তো অত্যন্ত দায়িত্বশীল পদে আছেন এবং এটা সাংবিধানিক পদ। এরকম একটা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে না। রাবার স্ট্যাম্প তো হতে পারে না তারা। অবশ্যই দেখবে তারা। তবে তারা সিদ্ধান্ত (গেজেট প্রকাশ করলে) নিয়ে ফেললে একবার আর পরিবর্তন করতে পারবে না। তখন সেটা আদালতে যেতে হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ’র ৯১(ক) সংশোধন করে সেখানে ক(ক) উপ-অনুচ্ছেদ সংযোজনের মাধ্যমে ফলাফল প্রকাশের পরেও ভোট বাতিলের ক্ষমতা চেয়ে ইসির দেওয়া প্রস্তাবে মন্ত্রিপরিষদ গত বৃহস্পতিবার (১৮ মে) আংশিক অনুমোদন দেয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব সেদিন ব্রিফিংয়ে বলেন, অনিয়ম হলে নির্বাচন কমিশন ভোটের ফলাফল সংশ্লিষ্ট এক বা একাধিক কেন্দ্রেরটা বাতিল করতে পারবে। পুরো আসনের ফলাফল বাতিল করতে পারবে না।
এ নিয়ে অনেকে সমালোচনা করেছেন, নির্বাচনে অনিয়ম হলে তা বাতিলে ইসির ক্ষমতা কমিয়ে দিল সরকার। গাইবান্ধার-৫ উপ-নির্বাচনের মতো আর ভোট বাতিল করতে পারবে না।
বিষয়টির ব্যাখা দিয়ে মো. আলমগীর বলেন, একটা বিষয় খুব স্পষ্ট। বারবার মিডিয়া ভুল নিখেছে যে, গেজেট প্রকাশের পর আমরা ফলাফল বাতিল করতে চাই। অনেকে আর্টিকেলেও তাই লিখছেন। একজন প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনারও লিখেছেন যে, গেজেট হওয়ার পর ফলাফল বাতিল করতে চায়, এটা কোন অধিকারে। অনেকে মিডিয়ায় দেখে কনফিউজড হয়েছেন।
তিনি বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল পাঠালে তা কমিশন গেজেট আকারে প্রকাশ করবে। গেজেট প্রকাশ মানেই হলো সেটা কমিশনের সিদ্ধান্ত। সেটা তো আর পরিবর্তন করা যাবে না। তখন আদালতে যেতে হবে। আমরা যেটা চেয়েছি, তা হলো রিটার্নিং কর্মকর্তা কোনো ফলাফল পাঠিয়েছেন, কিন্তু আমাদের কাছে অভিযোগ বা তথ্য আছে, যে নির্বাচনে অনিয়ম বা কারচুপি হয়েছে, যা রিটার্নিং কর্মকর্তা আমলে নেয়নি। তখন আমরা সেই ফলাফল স্থগিত রেখে তদন্ত করবো। তদন্ত করে যদি সেই অভিযোগের সতত্যা না পাওয়া যায় তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার ফলাফলটাই গেজেট আকারে প্রকাশ করবো। আর যদি সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে গেজেট না ফলাফল বাতিল করবো।
এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ভোট চালকালীন ভোট বাতিলের যে ক্ষমতা [আরপিও-৯১(ক)], সেটা তো আছেই। কোনো খর্ব করা হয়নি। সেটা নিয়ে তো আমরা কোনো পরিবর্তন চাইনি। আমরা প্রস্তাব না দিলে সেটাতে পারিবর্তন আসবে না। আমরা যে সমস্ত বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছি, মন্ত্রিপরিষদ কেবল সেগুলোই পরিবর্তন, পরিমার্জন করতে পারবে। এমনকি সংসদও তাই করবে।
গাইবান্ধার মতো অনিয়ম হলে নির্বাচন চলাকালে ভোট বন্ধ করতে ভবিষ্যতেও পারবেন মন্তব্য করে মো. আলমগীর বলেন, এটা আমরা কেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তাও পারেন। ১০০টা কেন্দ্রে সমস্যা হলে ১০০টা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তাই বন্ধ করতে পারেন। ফলাফল ঘোষণার আগেও পারেন বন্ধ করতে।
আগে ছিল শুধু নির্বাচন চলাকালীন ভোট বাতিলের ক্ষমতা ছিল। এখন ভোট শেষ হলেও গেজেট প্রকাশের আগ পর্যন্ত বাতিল করতে পারবে কমিশন। তাই আগের চেয়ে ক্ষমতা আরও বাড়ল। ১০০টা কেন্দ্রেও অনিয়ম পাওয়া যায়, আমরা ১০০টাই বাতিল করে দেবো।