পঞ্চমবারের মতো শিরোপা ঘরে তুলল চেন্নাই
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: একেই বুঝি বলে ফাইনাল ম্যাচ! কী ছিল না এই ম্যাচে? বৃষ্টির কারণে আগের দিন ম্যাচ মাঠেই গড়ায়নি। আজ রিজার্ভ ডেতেও ম্যাচ ভেসে যাওয়ার শঙ্কা ছিল। তারপরও উত্তেজনা ছড়ানো হাইভোল্টেজ ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হাসল চেন্নাই সুপার কিংস।
আইপিএলের ১৬ তম আসরের ফাইনালে শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ের ম্যাচে ৫ উইকেটে জয় পেয়েছে চেন্নাই। এই জয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের সমান রেকর্ড পঞ্চমবারের মতো আইপিএলের শিরোপা ঘরে তুলল মহেন্দ্র সিং ধোনির দল।
প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে আইপিএলে ফাইনালের ইতিহাসে রেকর্ড ২১৪ রান সংগ্রহ করে গুজরাট টাইটান্স। জবাবে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে রান তাড়া শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে চেন্নাইকে শিরোপা জেতান অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা।
সোমবার (২৯ মে) আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে হাইভোল্টেজ ফাইনালে গুজরাটের দেওয়া ২১৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চেন্নাই মাত্র ৩ বল মোকাবিলা করার পরই বৃষ্টি নামে। এরপর ১৫ ওভারে ধোনির দলের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৭১ রান। এই রান তাড়া করতে নেমে চেন্নাইয়ের দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও ঋতুরাজ গায়কোয়াদ ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন।
নতুন নিয়মে পাওয়ার প্লের ৪ ওভারে ৫২ রান করেন এই দুই ব্যাটার। দলীয় ৭৪ রানের মাথায় ২৬ রানে ব্যাট করা গায়কোয়াদের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। একই ওভারের শেষ বলে আরেক ওপেনার কনওয়ে ৪৭ রান করে বিদায় নেন। এই দুজনকেই বিদায় করে ম্যাচে ফেরান আফগান চায়নাম্যান স্পিনার নুর আহমাদ।
এরপর শিভম দুবে ও আজিঙ্কা রাহানে ব্যাট হাতে চেন্নাইকে এগিয়ে নেন। কিন্তু ১৩ বলে সমান দুটি করে চার-ছক্কায় ২৭ রান করে মোহিত শর্মার বলে বিদায় নেন রাহানে। এরপর দলীয় ১৪৯ রানের মাথায় পরপর দুই বলে সাজঘরে ফেরেন অম্বাতি রাইডু (১৯) ও মহেন্দ্র সিং ধোনি (০)। এই দুই উইকেটও নেন সাবেক চেন্নাই তারকা পেসার মোহিত।
শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৩ রান। প্রথম চার বল থেকে মাত্র ৩ রান নিতে পারেন চেন্নাইয়ের দুই ব্যাটার দুবে ও জাদেজা। ফলে শেষ দুই বলে জয়ের জন্য দরকার হয় ১০ রান। প্রথম বলে সজোরে ছক্কা হাঁকানোর পর শেষ বলে উইকেটের বাম পাশ দিয়ে চার মেরে চেন্নাইয়ের জয় নিশ্চিত করেন জাদেজা।
এদিন টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন চেন্নাইয়ের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। ব্যাটিংয়ে নেমে গুজরাটকে দুই ওপেনার শুভমান গিল ও হৃদিমান সাহা দারুণ সূচনা এনে দেন। এই দুই ব্যাটার উদ্বোধনী জুটিতে ৬৭ রানের জুটি গড়ে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন।
তবে রবীন্দ্র জাদেজার করা সপ্তম ওভারে শেষ বলে ধোনির কল্যাণে স্ট্যাম্পিং হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন গিল। এবারের আসরে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তরুণ এই ব্যাটার ২০ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ৩৯ রান করেন। তার বিদায়ের পরও রানের চাকা সচল রাখেন সাহা ও তিনে নামা সাই সুদর্শন। তারা দুজনে ৪২ বলে ৬৪ রানের জুটি গড়েন।
১৪ ওভারের শেষ বলে উইকেটের পিছনে ধোনির হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন হৃদিমান সাহা। ফিফটি হাঁকিয়ে ৩৯ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৫৪ রান করা উইকেটকিপার এই ব্যাটারকে বিদায় করেন পেসার দীপক চাহার। এরপর ব্যাট হাতে একাই ঝড় তোলেন ২১ বছর বয়সী সুদর্শন।
ইনিংসের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে আউটের আগে ৪৭ বলে ৮ চার ও ৬ ছক্কায় ৯৬ রান করেন সুদর্শন। এরপর শেষ দিকে হার্দিক পান্ডিয়ার অপরাজিত ২১ রানে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে আইপিএলে ফাইনালের ইতিহাসে রেকর্ড ২১৪ রান সংগ্রহ পায় গুজরাট টাইটান্স।
বোলিংয়ে চেন্নাইয়ের শ্রীলঙ্কান পেসার মাথিশা পাথিরানা ৪৪ রানে দুই উইকেট নেন। এছাড়া চার ওভারে ৩৮ রান দিয়ে ১ টি করে উইকেট পান দীপক চাহার ও রবীন্দ্র জাদেজা।