দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করা এবং আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা করাসহ তিন দফা দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করেছে চাকরিপ্রত্যাশীরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা প্রতিবাদ হিসেবে প্রতীকী সনদ ছিঁড়েছেন।

শনিবার (১০ জুন) রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষার্থী সমাবেশে ৩০ ঊর্ধ্ব সার্টিফিকেট ছেঁড়ার আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যোগ দেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশীদের সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক শরিফুল হাসান শুভ।

চাকরিপ্রত্যাশীদের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩৫ বছর করতে হবে। একইসঙ্গে সরকারি চাকরিতে আবেদনের ফি কমিয়ে সর্বোচ্চ প্রথম শ্রেণিতে ২০০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১৫০ টাকা, তৃতীয় শ্রেণিতে ১০০ টাকা, চতুর্থ শ্রেণিতে ৫০ টাকা করার দাবিও জানান তারা। এ ছাড়াও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে বঙ্গবন্ধুর নামে বঙ্গবন্ধু ল’ কমপ্লেক্স (বঙ্গবন্ধু চেয়ার এবং একটি ম্যুরাল) স্থাপন করার দাবি জানান তারা।

আয়োজকরা জানান, আগেও নানা সময়ে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করাসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে মাঠে ছিলেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। এসব আন্দোলন, দাবি ও আশ্বাস পুলিশি বাধাসহ নানান কারণে ভেস্তে গেছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে এমন ঘটনা ঘটে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়াও এসব আন্দোলনে হামলার অভিযোগ রয়েছে সরকার দল সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ও দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে।

আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, করোনা মহামারির সময়ে প্রায় সব ধরনের চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বন্ধ ছিল। পৃথিবীর অনেক দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর বা তার বেশি থাকা সত্ত্বেও করোনা মহামারির কারণে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আরও ২-৩ বছর পর্যন্ত বাড়িয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে এখন পর্যন্ত ৭১ বার সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবি উত্থাপন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির সুপারিশ করলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। তারা বলেন, বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮’র পাতা ৩২ এবং শিক্ষা দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়াও ২০১১ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসরের বয়স দুই বছর বাড়িয়ে ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো হয়নি। চাকরি শেষে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ স্বাভাবিক চাকরি প্রক্রিয়া ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় নতুনদের জন্য। ফলে দেশে বাড়তে থাকে শিক্ষিত-উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা।