দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: দেশে হঠাৎ করেই আশঙ্কাজনকহারে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। দিন যতই যাচ্ছে, পরিস্থিতি ততই ভয়াবহ হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছয়গুণ বেশি। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বিগত বছরগুলোর চেয়ে এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাও রেকর্ড ভাঙতে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩ হাজারের বেশি রোগী। এরমধ্যে চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনেই হাজার বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তাছাড়া এ বছর এখন পর্যন্ত ২২ জনের ‍মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনে নয়জনের মৃত্যু হয়েছে।

পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে মৃত্যু হয় ৬ জনের, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জনের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু, মার্চে কারও মৃত্যু না হলেও ১১১ জন আক্রান্ত, এপ্রিলে ১৪৩ জনের মধ্যে দুইজনের মৃত্যু এবং মে মাসে ১ হাজার ৩৬ জন আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে মৃত্যু হয় দুজনের। গত ৪ বছরের প্রথম ৫ মাসে ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হয়নি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু এখন আর বর্ষা মৌসুমের আতঙ্ক নয়। ফলে এর ভয়াবহতা বাড়ছে। এটি মোকাবিলায় দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর তৎপরতার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও ব্যাপকভাবে সচেতন হতে হবে।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। গত বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ জুন মাস থেকে শুরু হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর মে মাস থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। তাহলে হয়তো রক্ষা পাব, না হলে ডেঙ্গু এবার মহামারি আকার ধারণ করতে পারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম জানান, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার বিষয়ে সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সংশোধিত গাইডলাইন প্রতিটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালগুলোর চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক, ওষুধসহ সবকিছু সরবরাহ করা হচ্ছে।