দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: হকি ফেডারেশনের নির্বাচন নিয়ে জল ঘোলা হবে, সেটি আগে থেকেই অনুমেয় ছিল। শেষ পর্যন্ত সেটিই হলো। ফেডারেশনের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদের বিরুদ্ধে এবার কাউন্সিলরশিপে কারচুপির অভিযোগ আনা হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, নিজের প্রভাব খাটিয়ে কাউন্সিলরদের তালিকায় পরিবর্তন এনেছেন সাঈদ। দুইজন কাউন্সিলরের নাম সরিয়ে নিজের প্যানেলের দুজনকে তালিকায় ঢুকিয়েছেন বলেও অভিযোগের আঙুল উঠেছে সাঈদের দিকে।

প্রথম বিভাগ ক্লাব ঢাকা ইউনাইটেডের সভাপতি সাজেদ এ আদেল এবং কম্বাইন্ড স্পোর্টিং ক্লাবের জহিরুল ইসলাম এ অভিযোগ করেছেন। একইসঙ্গে নির্বাচনের বিরুদ্ধে আদালতে রিটও করেছেন তারা।

আদেল বলেন, ‘অন্যায়ভাবে আমাদের কাউন্সিলরশিপ বাতিল করা হয়েছে। আমি এনসিএতে গিয়েছিলাম, আমার আপত্তিপত্র জমা দিতে। কিন্তু বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ সাহেব ৩০ থেকে ৪০ জন লোক নিয়ে আমাকে আটকে দেয়। আমার কাগজপত্র কেড়ে নেয়। তিনি (সাঈদ) সরাসরি বলেন, আমাকে যে আপনি তো এসব জমা দিতে পারবেন না।’

তিনি (আদেল) আরও বলেন, ‘আমার সঙ্গে জহিরুল ইসলামও ছিল। আমাদের দুজনের নাম কাউন্সিলর থেকে তিনি সরিয়ে নিজের ঘনিষ্ঠ দুজনের নাম তালিকায় ঢুকিয়ে দিয়েছেন। আমাদের তো এখন আইনের আশ্রয় নেওয়া লাগবেই। সে কারণে আমি রিট করেছি।’

এ বিষয়ে হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ বলেন, ‘দেখেন, এ রকম মিথ্যা বানোয়াট কথা মানুষ কীভাবে বলে; সেটি আমার জানা নেই। আমি যতদূর জানি, একজন আপত্তিপত্র জমা দিতে চেয়েছিল, কোনো কারণে সেটি জমা দিতে পারেনি। এখানে আমাকে টেনে এভাবে মিথ্যা বানোয়াট কথা ছাড়ানোর মানেটা কি, সেটাই বুঝলাম না। দেখেন এখন ৯৯৯ এ কল দিলে সঙ্গে সঙ্গে সাহায্য চলে আসে। আমি যদি তাকে কিছু করতামই, তাহলে কি সে কল দিয়ে সাহায্য চাইতো না?’ নানান অনিয়মের অভিযোগ থাকা স্বত্ত্বেও গত ১২ জুন হকি ফেডারেশনের নির্বাচনের প্রাথমিক ফল প্রকাশ করে জাতীয় ক্রীড়া সংস্থা (এনএসসি)। নির্দিষ্ট পদের বিপরীতে একাধিক মনোনয়নপত্র জমা না পড়ায়, প্রাথমিক ফল ঘোষণা করে এনএসসি। সেখানে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে টানা দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হন সাঈদ।

২০১৯ সালে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় পলাতক ছিলেন সাঈদ। সে সময় তিনি ছিলেন হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই পদে বসেন তিনি। ২০২০ সালে ফেডারেশনের সে সময়কার সভাপতি এয়ার চিফ মার্শাল মাশিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত সাঈদকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন তার পদ থেকে। সে সময়ও ক্যাসিনো মামলায় পলাতক ছিলেন সাঈদ।

২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে দেশে ফিরে আসেন তিনি। এরপর ফেব্রুয়ারিতেই বসেন হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে।

সে সময় সাঈদের স্বপদে ফেরা নিয়ে আইনগত কোনো বাধা নেই বলেই জানিয়েছিলেন, ফেডারেশনের সভাপতি শেখ আবদুল হান্নান। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তিনি কমিটিতে ঢুকবেন। এ ব্যাপারে যদি কোনো নীতিগত বাধা না থাকে, তাহলে আমার পক্ষ থেকে তো কোনো বাধা নেই। এখানে যারা কমিটির অন্যান্য সদস্য আছেন, সবাই মিলে এই সিদ্ধান্তের পক্ষে অনুমতি দিয়েছেন। যদি অন্য কোনো বাধা না থাকে, তাহলে তিনি যোগ দেবেন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে।’