দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারের স্মৃতি নিয়ে টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের এই সিরিজের শুরুটা বেশ দুর্দান্ত করেছিল করেছিল টাইগাররা। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দ্রুতই ৩ উইকেট তুলে নিয়ে অল্পতেই আটকে ফেলার সম্ভাবনা তৈরি করেছিল বাংলাদেশের বোলাররা। তবে মোহাম্মদ নবীর অতিমানবীয় ফিফটিতে ১৫৪ রানের লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে আফগানরা। ফলে টাইগারদের জয়ের জন্য এখন লক্ষ্য ১৫৫ রান।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের কাপ্তান সাকিব আল হাসান। অধিনায়কের সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না, তা ইনিংসের শুরুতেই প্রমাণ করেন টাইগার বোলাররা।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। পেসার তাসকিন আহমেদের বল উড়িয়ে মারেন আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। তবে অনেকটা দৌড়ে এসে উল্টোদিকের ক্যাচটা তালুবন্দি করেও শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেননি রনি তালুকদার। ফলে ফিফটি-ফিফটি চান্স মিসে হতাশ হয়ে পড়ে টাইগার শিবির।

তবে স্বাগতিকদের বেশিক্ষণ হতাশ করে রাখেননি স্পিনার নাসুম আহমেদ। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকান জাজাই। পরের বলেই হযরতউল্লাহ জাজাইকে ফিরিয়ে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন বাঁহাতি এই স্পিনার। তাওহিদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৮ রানে ফেরেন হার্ডহিটার এই ব্যাটার।

জাজাইকে ফেরানোর পরের ওভারেই আরেক আফগান ওপেনার গুরবাজকে ফেরান তাসকিন। চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে তাসকিনের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে মেহেদি হাসান মিরাজের তালুবন্দি হন তিনি। ১১ বলে ১৬ রান করে বিদায় নেন ডানহাতি এই উইকেটকিপার ব্যাটার।

তিনে ব্যাট করতে নামা ইবরাহিম জাদরান বিদায় নেন জাজাইয়ের মতো। পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে হাঁকান ছক্কা তিনি। তবে শরিফুল ইসলামের পরের বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে ৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এই নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইবরাহিমকে পাঁচবার আউট করলেন যুব দলের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা এই পেসার।

যার সুবাদে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৪০ রানের মধ্যেই আফগানদের ৩ উইকেট তুলে শুরুতেই চেপে ধরেছিল স্বাগতিকরা। এরপর চারে ব্যাট করতে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি করিম জানাত। দলীয় ৫২ রানের মাথায় সাকিব আল হাসানের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে নাজমুল হাসান শান্তর তালুবন্দি হন তিনি। ৯ বলে ৩ রান করে বিদায় নেন এই পেস অলরাউন্ডার।

এরপর পঞ্চম উইকেটে দলের হাল ধরেন মোহাম্মদ নবী ও নাজিবউল্লাহ জাদরান। তারা দুজনে মিলে ৩৫ রানের জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। কিন্তু তাদের এই জুটি ভেঙে দেন অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। চতুর্দশ ওভারে তার বল উইকেটের পেছনে তুলে দেন নাজিবউল্লাহ। দারুণ ক্যাচে ২৩ রানে আফগান ব্যাটারকে বিদায় করেন লিটন।

তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করে দলকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেন আফগান সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী। তার ব্যাটে ভর করে ঘুরে দাঁড়িয়ে শেষ তিন ওভারের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৫৪ রানের লড়াকু পুঁজি পেয়েছে আফগানিস্তান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেন নবী। এছাড়া ১৮ বলে ৪ ছক্কায় ৩৩ রানের ক্যামিও এক ইনিংস খেলেন আজমতউল্লাহ।

বাংলাদেশের হয়ে বোলিংয়ে সর্বোচ্চ দুই উইকেট শিকার করেন সাকিব। এছাড়া ১ টি করে উইকেট পান নাসুম আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদি মিরাজ।