দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রাজনৈতিক সংকট নিরসনে দেশে সংলাপের পরিবেশ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এসময় সংলাপের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।

শনিবার সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকা সফরত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ৬ সদস্যের একটা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব কথা জানান।

রাজনৈতিক সংলাপের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে খসরু বলেন, 'বাংলাদেশে যেখানে কোনো ডেমোক্রেটিক অর্ডার নেই। মানবাধিকার প্রশ্নবিদ্ধ, আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ, জীবনের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ, যেখানে ডেমোক্রেটিক অর্ডার অনুপস্থিত, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই সেখানে সংলাপের জন্য তো একটা ডেমোক্রেটিক অর্ডার লাগে। সংলাপটা ডেমোক্রেটিক অর্ডারের অংশ কিন্তু। প্রথমে তো সংলাপের এনভায়রনমেন্ট ক্রিয়েট করতে হবে। তারপর সংলাপের প্রশ্ন।'

তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের টিম কেন বাংলাদেশে এসেছে? দক্ষিণ এশিয়ার অন্য কোন দেশে তো তাদের যেতে হচ্ছে না। কেন তাদের বাংলাদেশে আসতে হচ্ছে এটা যেমন সকলের মনে প্রশ্ন, নিশ্চয়ই ওদের মনে এটা প্রশ্ন তাদেরকে কেন আসতে হচ্ছে এখানে? স্বাভাবিকভাবে বর্তমান সরকারের অধীনে যে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ এটাই তাদের আসার ভিত্তি। এই ভিত্তির ওপরে বাংলাদেশের ওপর সারাবিশ্ব নজর দিয়েছে। তারা জানতে চাচ্ছে বাংলাদেশের নির্বাচনটা আগামী দিনে আদৌ জনগণের ভোটের মাধ্যমে সম্ভব হবে কি হবে না।

বিএনপির বৈদেশিক কমিটির প্রধান বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে যেটা বলেছি, এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার কোনো প্রশ্ন ওঠেনা, সম্ভব না। কারণ এখনি ডিসিদের, পুলিশের পোস্টিং হচ্ছে। বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার চলছে, বিভিন্ন জায়গায় আক্রমণ চলছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের মামলা ত্বরান্বিত করে সাজা দিচ্ছে। যাতে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে। অর্থাৎ ভোট চুরি প্রত্যেকদিন চলছে বাংলাদেশে। আগামীতে তারা নিয়ন্ত্রণ করে ভোট চুরি করবে। স্বাভাবিক এই বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে। আমরা বলেছি, এই অবৈধ সরকারের অধীনে দেশের মানুষ তাদের ভোট প্রয়োগ করতে পারবে না। বিষয়গুলো সবার জানা আছে, কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিষয়গুলো যেহেতু আলোচনা আসছে, তাই বারবার বলতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এবং গণতান্ত্রিক বিশ্ব মনে করে না এই মুহূর্তে বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। তাদের এখানে আসার উদ্দেশ্য পরিষ্কার করে যে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হয়নি। তারা তো নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ইন্ডিয়াতে যাচ্ছে না। তারা কেন বাংলাদেশে এসেছে। বিষয়টা তো দিনের আলোর মতো পরিষ্কার যে বাংলাদেশে নির্বাচন হয় না। এবং আগামীতে যে নির্বাচন হবে না তার প্রমাণ প্রত্যেকদিন আমরা দেখছি।

সকাল ৯টায় শুরু হওয়া বিএনপির সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দলের বৈঠক চলে ঘণ্টাব্যাপী। বৈঠকে বিএনপি'র প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন- দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ, বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, বিএনপি মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ।