দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: জাতীয় সংসদের শূন্য ঘোষিত ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনের ভোট শুরু হয়ে ৩ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কেন্দ্রগুলোতে এখন পর্যন্ত ভোটারদের উপস্থিতি কম দেখা গেছে।  

ভোটারদের তুলনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি দলের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বেশি।

সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল থেকে এলাকায় ভোটগ্রহণের এমন চিত্র দেখা যায়।

ভাষানটেক স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের ভোটার মো. লাল মিয়া বলেন, ভোটগ্রহণের পরিবেশ সুন্দর। কিন্তু ভোট দিতে আসছে না মানুষ। কেন আসছে না বলতে পারি না।

সরকার দলের কর্মী মো. শোয়েব বলেন, ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। এখন মানুষ ভোট দিতে তেমন আসে না।

ভাষানটেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী শেখ সাইফুল ইসলাম বলেন, জাকের পার্টি জাতীয় পার্টি ও নৌকা মার্কার এজেন্ট আছে আমাদের এই কেন্দ্র। এখানে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হচ্ছে। সকালে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে ভোটকেন্দ্রে ভোটার কম এসেছে। ভাষানটেক পকেট গেট এলাকায় সরকারি কর্মকর্তা বেশি বসবাস করেন। তারা দুপুরের পরে ভোট দিতে আসবেন। তখন ভোটার সংখ্যা বাড়বে।

গুলশান-২ এর গুলশান মডেল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্র ঘুরে জানা যায়, এই স্কুলে মোট ৫টি কেন্দ্র আছে। তবে সকাল থেকে এই কেন্দ্রে তেমন একটা ভোটার উপস্থিতি দেখা যায়নি। তবে এ কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি থেকে প্রার্থীদের এজেন্ট সংখ্যা বেশি দেখা গেছে। এই কেন্দ্রে নৌকা, লাঙ্গল, গোলাপ মার্কার এজেন্টদের সকাল থেকেই দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। কিন্তু ভোট শুরু হওয়ার পর সকাল সাড়ে নয়টার পর একতারা প্রতীকের প্রার্থী হিরো আলমের এজেন্টদের দেখা গেছে। তবে তাদের গলায় কোনো আইডি কার্ড ছিল না। যে কারণে বোঝার উপায় নেই যে তারা কোন প্রার্থীর এজেন্ট।

ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে 8 জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন - নৌকা প্রতীকে প্রার্থিতা করছেন মোহাম্মদ এ আরাফাত; জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে সিকদার আনিসুর রহমান; বাংলাদেশ কংগ্রেসের রেজাউল ইসলাম স্বপন লড়ছেন ডাব প্রতীকে; তাছাড়া বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের আকতার হোসেন লড়ছেন ছড়ি প্রতীকে; জাকের পার্টির কাজী রাশিদুল হাসান লড়ছেন গোলাপ ফুল প্রতীকে; তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান লড়ছেন সোনালী আঁশ প্রতীকে; ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন তরিকুল ইসলাম ভূইয়া; একতারা প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। এ নির্বাচনে তিনিই সবচেয়ে বেশি আলোচনার জন্ম দিয়েছেন।

জানা যায়, নির্বাচনে সাধারণ কেন্দ্রে অস্ত্রসহ পুলিশ পাঁচজন, আনসারের দুইজন সদস্য থাকছে। এছাড়া অস্ত্র ছাড়া লাঠি হাতে আনসারের রয়েছে ১২ জন সদস্য। অন্যদিকে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে পুলিশের দুজন অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে পুলিশের ১০টি মোবাইল টিম পাঁচটি মোবাইল স্ট্রাইকিং টিম, র‍্যাবের ছয় টিম ও ছয় প্লাটুন বিজিবি নিয়োজিত রয়েছে ভোটের এলাকায়।

নির্বাচনী অপরাধ আমলে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও সংক্ষিপ্ত বিচার কাজ পরিচালনায় ১৫ জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ছয়জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।

গত ১৫ মে ঢাকা -১৭ আসনের সংসদ সদস্য চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) মারা যাওয়ায় আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। রাজধানীর গুলশান, বনানী, ভাসানটেক থানা ও সেনানিবাস এলাকা নিয়ে আসনটি গঠিত। এ নির্বাচনে ১২৪ ভোটকেন্দ্রে তিন লাখ ২৫ হাজার ২০৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।