শব্দের জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ চলে যাওয়ার ১১ বছর আজ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: শব্দের জাদুকর প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ তার কথার জাদুতে সকলকে মায়ার বাঁধনে বেঁধেছেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সেই বাঁধন ছিঁড়ে তিনি নিজেই চিরতরে ঘুমিয়ে আছেন নুহাশপল্লীর লিচুতলায় ছোট্ট মাটির ঘরে। মাটির সঙ্গে আত্মিক বন্ধন গড়ে মিতালী করেছেন ওপার আকাশে।
২০১২ সালের ১৯ জুলাই তিনি ওপারে পাড়ি জমিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু নিজের সৃষ্টির মধ্য দিয়ে আজও অনুরাগীরে হৃদয়ে বেঁচে আছেন। গুণী এ কথাসাহিত্যিকের মৃত্যুর পর তার অভাব আজও পূরণ হয়নি।
হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ডাক নাম কাজল। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা আর মা গৃহিণী।
তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। কথাসাহিত্যিক জাফর ইকবাল তার ছোট ভাই। সবার ছোট ভাই আহসান হাবীব কার্টুনিস্ট ও রম্যলেখক। উপমহাদেশের বরেণ্য এই লেখক নির্মাণেও নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন অনন্য উচ্চতায়।
১৯৭২ সালে প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ এবং ১৯৭৪ সালে দ্বিতীয় উপন্যাস ‘শঙ্খনীল কারাগার’ প্রকাশের পর একজন শক্তিশালী কথাশিল্পী হিসেবে তিনি পরিচিতি পান। এরপর গল্প, উপন্যাস, সায়েন্স ফিকশন, শিশুতোষ গ্রন্থ, নাটক, প্রবন্ধ, আত্মজৈবনিক রচনা প্রভৃতি মিলিয়ে তার কয়েক শ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। আশির দশকে বাংলাদেশের টেলিভিশন নাটক ও ধারাবাহিক নাটকের ইতিহাসে তিনি আলোড়ন সৃষ্টি করেন।
তার পরিচালিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘নয় নম্বর বিপদসংকেত’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ প্রভৃতি।
বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৯৪ সালে একুশে পদক লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮) লাভ করেন।