আল-জাজিরার প্রতিবেদন
বাংলাদেশে মহামারির পর্যায়ে ডেঙ্গু
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে রাজধানীর অধিকাংশ হাসপাতাল। প্রতিদিনই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। কারণ বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যু সাধারণত আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়।
এদিকে বাংলাদেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার (২৪ জুলাই) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ০.৫৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত বছরও এর হার ছিল ০.৪৫ শতাংশ, যেসময় ডেঙ্গুতে রেকর্ড ২৮১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ডিজিএইচএস তথ্য বলছে, এ বছরের ১৮৫ মৃত্যুর মধ্যে ১১৫টিই ঘটেছে জুলাইয়ের প্রথম ২৩ দিনে। গত বছর একই সময়ে মারা গিয়েছিল মাত্র ২৯ জন। ২০১৯ সালে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। সে বছর মারা যান ১৭৯ জন। অনেকেই এখনো ২০১৯ সালকে ‘ডেঙ্গুর বছর’ বলে থাকেন।
চিকিৎসক এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এএনএম নুরুজ্জামান আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরাকে বলেন, এ বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ২০১৯ সালের চেয়ে বেশি না হলেও, অন্তত একই পরিমাণ প্রভাব ফেলেছে। তিনি আরও বলেন, সরকারের উচিত এ বছর ডেঙ্গুকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করা। ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া। অন্যথায়, পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। অপরদিকে গত ১৬ জুলাই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবকে ‘জরুরি জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতি’ ঘোষণা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশের চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন।
তবে ডিজিএইচএস মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম মনে করেন, এ বছর ডেঙ্গুকে মহামারি ঘোষণা করার সময় এখনো আসেনি। তিনি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরাকে বলেন, ডেঙ্গুকে মহামারি ঘোষণার জন্য আরও কিছু মানদণ্ডকে ন্যায্যতা দিতে হবে। আমি মনে করি না, আমরা এখনো সেই পর্যায়ে পৌঁছেছি। তাছাড়া, এটিকে মহামারি ঘোষণা করে মানুষের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করার কোনো মানে নেই।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া সবাই ঢাকার বাসিন্দা। এ সময়ে ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ২৯৩ জন ডেঙ্গু রোগী। সোমবার (২৪ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।