দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বর্তমান বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর ১৬০ জনের চিঠির পর এবার চিঠি দিলো তুরস্ক। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইস্যু করা চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ গণতন্ত্র ও আইনের শাসন লঙ্ঘন করে শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে একটি অন্যায় ও ভিত্তিহীন তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

বুধবার (৩০ আগস্ট) রাতে ড. ইউনূসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের চিঠিটি প্রকাশ করা হয়।

ফেসবুক পোস্টে দেখা যায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের পক্ষ থেকে জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির ২২তম দলের সদস্য প্রফেসর ড. আজিজ আকগিল স্বাক্ষরিত বার্তাটি মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) তারিখে ইস্যু করা হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ২০০৩ সালের ১৮ জুলাই প্রেসিডেন্ট বিসেপ তাইয়েপ এরদোগান তার্কিশ গ্রামীণ মাইক্রোফাইন্যান্স প্রোগ্রাম (টিজিএমপি) প্রকল্প গ্রহণ করেন। এ প্রকল্পের আওতায় দিয়ারবাকির অঞ্চলে অসচ্ছল নারীদের মাঝে ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্প চালু করা হয়। এরপর থেকে এ প্রকল্পটি দেশের ৬৯ অঞ্চলে এবং ১০০টি শাখার মাধ্যমে ২০ বছর ধরে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ সময়ের এ প্রকল্পে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনূস সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তিনি বিশ্বব্যাপী দরিদ্রদের মাঝে ক্ষুদ্রঋণের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে পরিচিত।

টিজিএমপি প্রকল্পের আওতায় এখনো পর্যন্ত এক বিলিয়ন ৬০৬ মিলিয়ন তার্কিশ লিরা ক্ষুদ্রঋণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ ঋণের আওতায় তুরস্কের ২ লাখ ১০ হাজার দরিদ্র নারী সচ্ছল হয়েছেন। তুরস্কে জামানত, গ্যারান্টি বা কোনো ধরনের আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া বিশ্বাসের ভিত্তিতে এ ঋণ দেওয়া হয় এবং এ ঋণ আদায়ে সফলতার হার ৯৯ দশমিক ৭ শতাংশ। টিজিএমপির সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট রিপোর্টের তথ্যমতে, তারা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মাঝে এক লিরা ঋণ দিবেন। যার সামাজিক প্রভাব হবে সাড়ে ৪ তার্কিশ লিরার সমান।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অন্যায্য ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার গণতন্ত্র ও বাংলাদেশের আইন ভঙ্গের অভিযোগ করা হয়েছে। অথচ তিনি ক্ষুদ্রঋণ এবং সামাজিক উদ্যোক্তা উদ্যোগের মাধ্যমে দারিদ্র্য মোকাবিলায় তার জীবন উৎসর্গ করেছেন। তিনি বর্তমান প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা।

চিঠিতে বলা হয়, এটা পরিতাপের বিষয় যে ড. ইউনূসের সারা জীবনের অর্জনগুলোর ব্যাপারে অন্যায় তদন্ত করা হচ্ছে। চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ ৭০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ১০৩ জন নোবেলবিজয়ীর স্বাক্ষর সংযুক্ত করা হয়েছে।