অক্টোবরে চলমান সরকার পতন আন্দোলনের সফল পরিণতি ঘটাতে চায় বিএনপি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: তফসিল ঘোষণার আগেই চলমান সরকার পতন আন্দোলনের সফল পরিণতি ঘটাতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। এজন্য দলের মধ্যে সুদৃঢ় ঐক্য নিশ্চিত এবং রাজধানী ঢাকা ও তার আশপাশের জেলাকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে মতামত দেন তারা।
গতকাল রোববার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার এক বৈঠকে দলের সিনিয়র নেতারা এই পরামর্শ দেন।
গত ২৮ আগস্ট দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলমান আন্দোলন ইস্যুতে কর্মকৌশল ঠিক করতে দলের ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এবং যুগ্ম মহাসচিবদের মতামত নিতেই এই বৈঠক হয়।
বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে সবার মতামত শোনেন। বৈঠকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই চলমান সরকার পতন আন্দোলনকে সফল পরিণতিতে রূপ দেওয়ার জন্য বেশির ভাগ নেতা মতামত দেন। সে ক্ষেত্রে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
বৈঠকে তিন নেতা তাদের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলায় আদালত যেভাবে সাজা দেওয়া শুরু করেছে, এর প্রতিবাদে আদালত ঘেরাও কর্মসূচি দিতে হবে। চলমান আন্দোলনকে বেগবান করতে সচিবালয়, নির্বাচন কমিশন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও’র মতামত দেন ওই তিন নেতা।
তবে দুই নেতা বলেন, ‘আমাদের চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সঠিক পথেই আছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া হরতাল কর্মসূচির দিকে না গিয়ে চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অব্যাহত রেখে ঢাকা ও ঢাকার আশাপাশের জেলার সাংঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। কোনো অবস্থায় হটকারী কোনো সিদ্ধান্তে যাওয়া যাবে না। শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক নয়; আন্দোলন সফল করতে সারা দেশ নিয়ে পরিকল্পণা গ্রহণে মতামত দেন তারা।’
বেশির ভাগ নেতা বলেন, ‘চলমান সরকার পতন আন্দোলনকে সফল পরিণতির দিকে নিতে হলে ঢাকা মহানগরকে নিজের পায়ে নিজেকে দাঁড়াতে হবে। সারা দেশের নেতাকর্মীদের ঢাকা এনে কর্মসূচি করে লাভ হয় না। কারণ, তারা রাস্তাঘাট ঠিকমতো চিনতে পারেন না। ’
বৈঠকে একজন নেতা বলেন, ‘গত ২৯ জুলাই আন্দোলনের প্রথম ধাপ ছিল। এখন চূড়ান্ত ধাপে যেতে হবে। এই সময়ে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার জন্য মতামত দেওয়া হয়। কারণ, এতে বিভক্তি বাড়ে। ফলে আন্দোলনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ’
বৈঠকে এক নেতা বলেন, ‘সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে দেখা যায়, একজন নেতা বা তার অনুসারীরা আরেক নেতার বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেয়। এ বিষয়টিকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া সভা-সমাবেশে বক্তা তালিকা ছোট করার মতামত দেন নেতারা। ’
বৈঠক অংশ নেওয়া নেতারা আরও বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সবার মতামত শুনেছেন। এই নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে চূড়ান্ত হবে।’
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম