দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:  বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে অ্যার্টনী জেনারেল অফিসের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে নোটিশ দেয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে বিবৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আলোচনায় আসা সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (অব্যাহতি প্রাপ্ত) এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।

বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেন্বর দূপুরে, তার লালমাটিয়ার বাসায় ভয়েস অফ আমেরিকাকে দেওয়া একান্ত এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিচারিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে আমি যে বক্তব্য দিয়েছি, আমি আমার অবস্থানেই ঠিকই আছি। আমি মনে করি ব্যাপারটি আরও সফটলি ডিল করা যেত।" তিনি বলেন, অ্যার্টনী জেনারেল অফিসের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে নোটিশ দিয়ে সকল আইন কর্মকর্তাদের বলা হয়েছিল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে বিবৃতির পাল্টা বিবৃতিতে ৪ সেপ্টেম্বর বিকেল চারটার মধ্যে স্বাক্ষর করতে।

উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর ড. ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া। একইসঙ্গে তিনি বলেছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিচারিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন, এ মন্তব্য করার তিন দিন পর গত ৭ সেপ্টেম্বর বিকালে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার নিয়োগ বাতিল করে দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ৮ সেপ্টেম্বর সকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়াকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান।এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে ভয়েস অফ আমেরিকা‘র পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকারটি নেয়া হয়।

ওদিকে, এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া তার পরিবারসহ শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার বারিধারাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে যান। তবে এদিন দৃতাবাস বন্ধ থাকায় তিনি সেখানে কতক্ষণ অপেক্ষা করে পরে বাসায় চলে গেছেন বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ- পুলিশ কমিশনার মো: শহীদুল্লাহ ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "সন্ধ্যার একটু পরপর এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া মার্কিন দূতাবাসে গিয়েছিলেন। দূতাবাসের গেইটের পাশে কতক্ষণ বসে ভেতরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। পরে জানতে পারেন ছুটির দিন। দূতাবাসে বন্ধ থাকায় তিনি বাসায় চলে গেছেন বলে জানতে পেরেছি।"

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল পুলিশ প্রশাসন সাথে কিংবা পুলিশ প্রশাসন তার সাথে কোন যোগাযোগ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে উপ- পুলিশ কমিশনার মো: শহীদুল্লাহ ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "আমরা এখনো জানতে পারেনি তিনি কি জন্য গিয়েছিলেন"।

"আমি আমার অবস্থানে ঠিক আছি"

ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে, আপনি কি আপনার অবস্থানে এখনো অটল আছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "আমি আমার অবস্থানেই ঠিক আছি। আমি মনে করি ব্যাপারটি আরও সফটলি ডিল করা যেত। তাহলে একটা প্রশ্ন আসতে পারে আইন কি সবার জন্য সমান, অবশ্যই সবার জন্য সমান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তো নিজেই বলেছেন, ড. ইউনূসের মামলার বিষয়ে যদি বিদেশী পর্যবেক্ষক আসে, আসুক কোন অসুবিধা নেই।"

তিনি বলেন, "একটা বিচারাধীন বিষয়ে যদি ধরেও নেয়া হয় বিবৃতি দেয়াটা বিচারের জন্য এক রকম অন্তরায়, তাহলে একইভাবে বলা যায় পাল্টা বিবৃতি দেয়াতেও বিচার প্রভাবিত হতে পারে। সব মানুষের স্বাভাবিক বিচার পাওয়ার অধিকার আছে, সে জায়গা থেকে বিষয়টা দেখতে হবে। যেহেতু তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূস সেই কারণে আরও সফটলি দেখতে হবে।"

"ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমার রক্তসম্পর্কীয় চাচা নন"

আত্মীয়তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "ফেইসবুকে তো অনেকে অনেক কথা বলেছেন, আমি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাতিজা। বিষয়টা আমি খোলামেলাভাবে বলি আমার বাবা চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসও একই সময়ে শিক্ষক ছিলেন। আমার বাবার কলিগ হিসেবে তিনি আমার চাচা। আত্নীয়তা কিংবা বংশগত সূত্রে তিনি আমার চাচা নন।"

"৪ঠা সেপ্টেম্বর বিকাল চারটার মধ্যে স্বাক্ষর করতে বলা হয়েছিল"

অ্যার্টনী জেনারেল অফিস থেকে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করার জন্য বলা হয়েছে আপনি দাবি করেছেন, কিন্তু অ্যার্টনী জেনারেল অফিস পরবর্তীতে তা অস্বীকার করেন, এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "অ্যার্টনী জেনারেলের অফিস থেকে যে নোটিশটি দেয়া হয়েছিল সেখানে বলা হয়েছিল আইন কর্মকর্তাদের ৪ সেপ্টেম্বর বিকেল চারটা মধ্যে স্বাক্ষর করতে হবে। এটা ছিল অ্যার্টনী জেনারেল অফিসের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মেসেজ। যদিও পরবর্তীতে অ্যার্টনী জেনারেল (স্যার) বলেছিলেন এই রকম কোন লিখিত নোটিশ দেয়া হয়নি। আর এখন বিষয়টা হলো যদি নোটিশ না…ই দেয়া হয়ে থাকে, তাহলে আমি যে স্বাক্ষর করিনি। তার তো কোন অপরাধই হয় না।"

"বিদেশী পর্যবেক্ষক এসে মামলা পর্যবেক্ষণ করায় আইনী কোন বাধা নেই"

বিদেশী পর্যবেক্ষক এসে ড. ইউনূসের মামলা পর্যবেক্ষণ করায় আইনী কোন বাধা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া বলেন, "বঙ্গবন্ধুর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় একই রকম বিষয়টা উঠে এসেছিল। তখন লন্ডন থেকে একজন আইনজীবি এসে বঙ্গবন্ধুর মামলায় পরামর্শ দিয়েছিলেন। ওই মামলায় বঙ্গবন্ধুর পক্ষে একজন আইনজীবী ছিলেন আইনমন্ত্রীর বাবা এডভোকেট সিরাজুল হক। ওই সময়ে বিদেশী লইয়ার কোর্টে সরাসরি শুনানি করতে পারেননি। উনারা বার কাউন্সিলের আইন অনুযাযী কোর্টে শুনানি করতে পারবেন না। তবে মামলায় সহায়তা করে পর্যবেক্ষণ দিয়ে ও বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে সহায়তা করতে পারবেন। এতে আইনী কোন বাধা নেই, এর নজিরও রয়েছে।"

"গণতান্ত্রিক দেশে ভিন্নমত থাকাটাই স্বাভাবিক"

তিনি বলেন, "ড. ইউনূসের বিষয়ে কেন কথা বলেছি এর কারণ ইসরাইলে ল রিফর্ম নিয়ে যে আন্দোলনটা চলছে, সে বিষয়ে আমি জেরুজালেম পোষ্ট এবং হারেজ-এ পড়েছি, ল রিফর্ম নিয়ে ইসরাইলের অ্যার্টনী জেনারেল তার স্বতন্ত্র অবস্থান নিয়েছেন। এটাকে আমার কাছে স্বাভাবিক মনে হয়েছে। গণতান্ত্রিক একটা দেশে তার মত থাকতেই পারে। গণতান্ত্রিক দেশে এটা খুবই স্বাভাবিক।"

তিনি আরও বলেন, "আমার ওই অবস্থানের পরে আমার অনেক বন্ধুরা মনে কষ্ট রেখেও আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা মনে করছে, নেত্রীর বিরুদ্ধে আমার অবস্থান। এটা হচ্ছে একদম অনুভবের বিষয়। এটা বুঝানোর বিষয় নয়।"

প্রধানমন্ত্রীকে বন্ধুহীন করার একটা চক্রান্ত

"আমার কাছে মনে হয়েছে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। বাংলাদেশের প্রথম নোবেল বিজয়ী, উনার সাথে জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একটা বিরোধীপক্ষ তৈরি করা হচ্ছে। যেটা একেবারেই প্রযোজন নেই।"

অপনি কি বুঝাতে চেয়েছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং প্রধানমন্ত্রীর মাঝে দৃরত্ব বাড়াতে কোন মহল কাজ করছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "এটা বন্ধুহীন করার চক্রান্ত। আমি পরিষ্কারভাবে তাই মনে করি। এই ষড়যন্ত্র অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে যে পরিস্থিতিগুলো সৃষ্টি হয়েছিল, ঠিক সেই রকম পরিস্থিতি এখন বিরাজ করছে। বঙ্গবন্ধু কন্যাদের আমাদের রক্ষা করতে হবে। এটা সম্পৃর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রীকে বন্ধুহীন করার একটা চক্রান্ত।"

এটা কারা করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "ব্যাপারটা হচ্ছে খন্দকার মোশতাক যে চক্রান্তটা করেছিলো, সেই চক্রান্তের পর পরিষ্কার বুঝা গেলো। নেত্রীর লেখা আর্টিকেলে তিনি পরিষ্কারভাবে বলে গেছেন, কিভাবে মুহুর্তের মধ্যে মানুষের রুপগুলো চেঞ্জ হয়ে গেলো। আমাদের আশঙ্কা সেটাই। আমরা যারা ছাত্রলীগ করে বড় হয়েছি। আমার আশঙ্কাটা সেই জায়গাতে।"

নেমপ্লেট খুলে ফেলা প্রসঙ্গে

বিবৃতিতে স্বাক্ষর না করাকে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্টে আপনাকে অফিস থেকে বরখাস্ত করার আগেই আপনার নেমপ্লেট খুলে ফেলা হয়েছে এটা আইন সিদ্ধ হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "কেউ একজন নিজেকে আলোচনায় আনার জন্য এমন কাজটা করতেই পারেন। আমার কাছে এটাই মনে হয়েছে।"

ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানি

বিবৃতিতে স্বাক্ষর না করায় আপনি কোন ধরনের ভয়ভীতি কিংবা হয়রানির শিকার হচ্ছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "১৯৯১ সালেই আতঙ্ক জয় করে ফেলছি। আমার ভেতর কোন আতঙ্ক নেই। তবে আমার স্ত্রী ও সন্তানেরা একটু আতঙ্কে অছে। আমি যেহেতু পরিষ্কার আছি আমার তেমন আতঙ্ক নেই। তবে কিছু মানুষ বুঝে হোক আর না বুঝে হোক আমাকে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। সেটা মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেইসবুক ও ইউটিউবের নীচে লেখালেখি করে। তবে আমি এসব পাত্তা দেই না।"

নিজের ছাত্রলীগ ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসঙ্গে

নিজের রাজনৈতিক ও পারিবারিক ইতিহাস তুলে ধরে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া বলেন, "আমি বড় হয়েছি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। আমার বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। যিনি ৫২ সালে ভাষা অন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন। আমার মা পাকিস্তান আমলে একজন নাট্যকর্মী ছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৫৫ সালে আমার মা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের অফিসার ছিলেন। (আমি) ১৯৯১ সালে এসএসসি পাস করার পর, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতরে থাকা চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে তৎকালীন ছাত্রনেতা অনুগ খস্তগীর, মো: কলিম এবং শাহজাহান ভাইদের হাত ধরে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেছি। এটা ছিল স্রোতের বিপরীতে দাঁড়ানো। এরই ধারাবাহিকতায় চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হয়েছি এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করে আইন অনুষদের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অধীনে আইন অনুষদের ক্যাম্পাস শাখার ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি।

আমেরিকান দূতাবাসে পরিবারসহ আশ্রয় প্রার্থনা

এদিকে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি ষ্টার শুক্রবার তার অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে পরিবারসহ আশ্রয় চেয়েছেনডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ থেকে বরখাস্ত এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।

ডেইলি ষ্টার তার প্রতিবেদনে জানায় যে তাদেরকে পাঠানো শুক্রবার ৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে, একটি ক্ষুদে বার্তায় জনাব ভূঁইয়া জানান, "আমি মার্কিন দূতাবাসে আজকে পুরো পরিবারসহ আশ্রয়ের জন্য বসে আছি। বাইরে পুলিশ। আজকে আমাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে ...। আমার ফেসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে গত ৪-৫ দিন যাবত অনবরত হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। এই সরকার ভালবাসার প্রতিদান দেয় জেল দিয়ে। আমার আমেরিকার কোনো ভিসা নেই। স্রেফ ৩টা ব্যাগে এক কাপড়ে আমার ৩ মেয়েসহ কোনোক্রমে বাসা থেকে বের হয়ে এখানে বসে আছি। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।"

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, এ ব্যাপারে ডেইলি স্টারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এই মুহূর্তে তাদের কাছে জানানোর মতো (এ ব্যাপারে) কোনো তথ্য নেই।

সুত্র: ভয়েস অফ আমেরিকা