দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত আফ্রিকার দেশ মরক্কোতে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এমন অবস্থায় আরেকটি ঘটনা সামনে এসেছে। যেটি কাদাচ্ছে বিশ্ববাসীকে। ভূমিকম্পের ফলে একটি স্কুলের ৩২ শিক্ষার্থীর সবার মৃত্যু হয়েছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, আরবী ও ফারসি ভাষার শিক্ষক নেসরিন আবু এলফাদেল। তার ক্লাসে ছিল ৩২ জন শিশু। মরক্কোর প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের পর শিক্ষার্থীদের খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারলেন, তাদের কেউ বেঁচে নেই। ওই শিশুদের বাড়ি দেশটির মধ্যাঞ্চলের আদাসেল গ্রামে।

গত সপ্তাহে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের এলফাদেল শিক্ষার্থীদের খোঁজ নিতে গ্রামে যান। গিয়ে দেখতে পান পুরো গ্রামই লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।

মারাকেশের দক্ষিণের এলাকাগুলো ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে। যেখানে অনেক পাহাড়ি গ্রাম সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। আদাসেল সেই জায়গাগুলোর একটি।

শিক্ষার্থীদের ‘ফেরেশতা’ হিসেবে বর্ণনা করে এলফাদেল জানান, দারিদ্র্য ও ব্যয়বহুল জীবনযাত্রার সঙ্গে লড়াই করা সত্ত্বেও ওই শিশু ও তাদের পরিবার স্কুলে যাওয়াকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিল। ৮ সেপ্টেম্বর রাতে ভূমিকম্পের ঠিক পাঁচ ঘন্টা আগে আমাদের শেষ ক্লাস ছিল।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভূমিকম্পের পরদিন শিক্ষিকা গ্রামে গিয়ে একে একে সবার খোঁজ করেন। যখন জানতে পারেন কেউ বেঁচে নেই, তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

তিনি বলেন, আমি ক্লাসের হাজিরা খাতা ধরে তাদের খোঁজ করি। মোট ৩২ জন। পরে জানতে পারি সবাই মারা গেছে।

এত বড় শোকের পর স্কুলশিক্ষিকা নাসরিনের গলা একদম শীতল। এরপরও তিনি চরম মানসিক আঘাত পেয়েছেন। ভুগছেন ট্রমায়। তিনি বলেন, ‘আমি ঘুমাতে পারি না। এখনো শোকের মধ্যে আছি। মানুষ আমাকে ভাগ্যবতী মনে করে। তবে আমি জানি না বাকি জীবন আমি কীভাবে বাঁচব।’

গত ৮ সেপ্টেম্বরের ওই ভূমিকম্পে প্রায় তিন হাজার মানুষ মারা গেছেন। এছাড়া ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক।