রুপিতে রপ্তানি কার্যক্রম শুরু করেছে ওয়ালটন
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে রুপিতে রপ্তানি কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশের শীর্ষ ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। এর মাধ্যমে রুপিতে বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্য লেনদেন শুরুর উদ্যোগ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো। উভয় দেশের মধ্যে প্রথম আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যিক লেনদেনটি নিজ নিজ মুদ্রায় সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে যৌথভাবে সহযোগিতা করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।
টাকা ও রুপিতে প্রথম আন্তঃসীমান্ত লেনদেন নিষ্পত্তি উপলক্ষে সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক (এসসিবি) এবং ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র মধ্যে চুক্তি হয়েছে। চুক্তিতে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ এবং এসসিবি’র সিইও নাসের ইজাজ বিজয় নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন।
ওয়ালটন রেফ্রিজারেটরের সিবিও তোফায়েল আহমেদ জানিয়েছেন, চলতি বছর ভারতের একটি খ্যাতনামা ইলেকট্রনিক্স পণ্য বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রায় ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ফ্রিজ রপ্তানি করবে ওয়ালটন। এর মধ্যে প্রাথমিক ধাপে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটির কাছে চলতি বছরের নভেম্বর মাসে ১ কোটি ৭ লাখ রুপি মূল্যের ফ্রিজ রপ্তানি করা হবে। এই অর্থের ১০ শতাংশ অগ্রিম লেনদেন ইতোমধ্যে রুপিতে পরিশোধ করেছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি। এই লেনদনটি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশি মুদ্রায় ওয়ালটনের বিশেষ অ্যাকাউন্টে জমা করেছে।
তিনি জানান, ভারতে ওয়ালটন বছরে প্রায় ১০০ কোটি রুপি মূল্যের ফ্রিজ, কম্প্রেসার, ফ্যান ইত্যাদি পণ্যসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ রপ্তানি করে। ওয়ালটনের রপ্তানি থেকে প্রাপ্ত আয়ের রুপি দিয়ে ভারতের সমপরিমাণ আমদানি বিল নিষ্পত্তি করতে পারবে বাংলাদেশ। ফলে, দুই দেশের লেনদেনের ক্ষেত্রে ডলারের ওপর চাপ কমবে। তাছাড়া, উভয় দেশের আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের দুই বার মুদ্রা বিনিময় করার খরচও কমবে। এতে লেনদেন নিষ্পত্তিতে সময়ও বাঁচবে।
উল্লেখ্য, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল মাত্র ২ বিলিয়ন ডলার। নতুন ব্যবস্থার অধীনে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে আমদানির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বিল রুপিতে নিষ্পত্তি করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে ওয়ালটন রুপিতে রপ্তানি বাণিজ্য কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।
জানা গেছে, বাংলাদেশের নাম্বার ওয়ান ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড হওয়ার পর ওয়ালটনের ভিশন এখন ‘গো গ্লোবাল ২০৩০’। অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম সেরা গ্লোবাল কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ডে পরিণত হবে ওয়ালটন। সে লক্ষ্য অর্জনে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ওয়ালটনের পণ্য নিজস্ব ব্র্যান্ড লোগোর পাশাপাশি ওইএম (অরিজিনাল ইক্যুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার) এর আওতায় এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও ইউরোপসহ বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। বর্তমানে গ্লোবাল মার্কেটে নিজস্ব ব্র্যান্ড বিজনেস সম্প্রসারণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে ওয়ালটন।