আমির হামজা,দ্য রিপোর্ট: দেশি বিদেশী  চলাচলকারী সব এয়ারলাইনসের অসহযোগিতার কারণে মার্কিন ডলারের পরিবর্তে টাকায়  ফ্লাইটের ভাড়া নির্ধারণের আদেশ ছয় মাস পেছানো হয়েছে। আগে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশে চলাচলকারী সব এয়ারলাইনসকে গত ১ জুলাই থেকে ডলারের পরিবর্তে টাকায় ফ্লাইটের ভাড়া নির্ধারণ করার কথা ছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়,গত সপ্তাহে (সেপ্টেম্বর ১২) বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব রোকসিন্দা ফারহানার সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে ,নতুনভাবে একটা সার্কুলারে দেশের চলাচলকারী সব এয়ারলাইনসগুলোকে আরো ছয় মাস পিছিয়ে মার্কিন ডলারে ভাড়া নির্ধারণের অনুমতি দেয়া হয়েছে। মার্কিন ডলারের পরিবর্তে টাকায় ফ্লাইটের ভাড়া নির্ধারণ কার্ষকর হবে আগামী বছর জানুয়ারি মাসের ১৬ তারিখে। সার্কুলারে আরো বলা হয়েছে, আংশিক সংশোধনের মাধ্যমে নতুন আদেশ জারি করা হয়েছে ।

বর্তমানে ডলারের বিপরীতে টাকার দাম কমে যাওয়ায় যেসব যাত্রীদের তুলনামূলক বেশি ভাড়া গুণতে হচ্ছিল, তাদের জন্য সরকারের এই উদ্যোগ কিছুটা স্বস্তি নিয়ে আসবে বলা হয়েছিল। বর্তমান মার্কিন ডলারের দাম বাংলাদেশের টাকায় ১০৯.৩৫ হয়েছে।জুলাই মাসে এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের টিকিট বিক্রির জন্য সব এয়ারলাইন্স হেডলাইন কারেন্সি হিসেবে টাকা ব্যবহার করবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।মধ্যপ্রাচ্য এবং মালয়েশিয়ার মতো বিভিন্ন জনাকীর্ণ আন্তর্জাতিক রুটে বিমান ভাড়া দুই মাসের ব্যবধানে মার্চ মাসে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে।ঢাকা-জেদ্দা রুটের ভাড়া মাত্র দুই মাস আগে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা থেকে মার্চ মাসে ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকায় উঠেছে।ঢাকা-মাস্কাট রুটের বিমান ভাড়া এখন ৮০,০০০ টাকা। তবে মাসকট-ঢাকা-মাস্কাট টিকিটের দাম কযেক মাস আগে ছিল ৫৫,০০০ টাকা।মূল্য বৃদ্ধির মধ্যে, যা জানুয়ারিতে ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে, যাত্রীরা এখন দীর্ঘ ভ্রমণ সত্তে¡ও সংযোগকারী ফ্লাইট সহ সস্তা ফ্লাইট বেছে নেয়।জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মতে, বাংলাদেশ চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে ২.১৩ লাখ কর্মী পাঠিয়েছে, যার বেশিরভাগই মধ্যপ্রাচ্য ও মালয়েশিয়ার দেশগুলোতে।

চার বছরের বিরতির পর গত আগস্ট থেকে মালয়শিয়াগামী শ্রমিকের সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ দেশটি এই বছরের ফেব্রয়ারিতে ২৯,০০০ এরও বেশি শ্রমিককে গ্রহণ করেছে।শ্রমিকরা মালয়েশিয়া যাওয়া শুরু করার পর কয়েক মাস আগে হঠাৎ করে ঢাকা-কুয়ালালামপুরের ভাড়া ৮০ হাজার টাকায় উঠে যায় বলে ট্রাভেল এজেন্টরা জানিয়েছেন।অনেক এয়ারলাইন্স ব্যাংকক, কলম্বো বা অন্যান্য শহরে ট্রানজিট ফ্লাইট দিয়ে যাত্রীদের কুয়ালালামপুরে নিয়ে যেতে শুরু করেছে। এতে ভাড়া কমেছে ৩০,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকা।স্টপওভার সহ ফ্লাইটের ভাড়াও জানুয়ারী থেকে প্রায় ৫০,০০০ টাকা বেড়েছে, যা প্রাক-কোভিড ভাড়ার প্রায় দ্বিগুণ।বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা), অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) এবং হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছিল, এই সিদ্ধান্ত অভিবাসী শ্রমিকদের উপকৃত করবে।