দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আশা করছেন, গুরুতর অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সরকার বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেবে বলে।

রাজধানীর নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত সমাবেশে আজ শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এক মাসের বেশি সময় ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর উল্লেখ করে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড। এ অবস্থায় আবারও সরকারের কাছে বিএনপি নেত্রীকে বিদেশে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার আবেদন করে তার পরিবার।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মহিলা সমাবেশে ফখরুল বলেন, "মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার। এর একটি মাত্র কারণ, তিনি বাইরে থাকলে জনগণের স্রোতকে তারা বন্ধ করতে পারবে না। তাদের ক্ষমতায় থাকা কঠিন হয়ে যাবে।"

দাবি জানিয়ে সরকারের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, "খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে পাঠাতে হবে। আমরা আশা করি সরকার অবৈধ হলেও তাকে দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেবে।"

ম্যান্ডেটহীন অবস্থায় রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে সরকার ক্ষমতায় টিকে আছেও অভিযোগ তার। তিনি বলেন, "গোটা দেশ আজ বিপদগ্রস্ত। প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে সরকার দেশের মানুষের কথা চিন্তা করছে না।"

বিএনপি মহাসচিব বলেন, "এই সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হতে পারে না। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সরকার আবার ক্ষমতায় আসলে নারী-শিশুসহ গোটা রাষ্ট্র নিরাপত্তাহীনতায় পড়বে।"

সরকার মা-বোনদেরও নির্যাতন করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, "তারা কাউকেই ছাড় দেয়নি। গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করতে নামা মা-বোনদেরও গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। অন্যায়ভাবে নির্যাতন করেছে, আমাদের এই অফিসের সামনেই অসংখ্য নারীদের অত্যাচার করেছে, নির্যাতন করেছে। তারা একটা অত্যাচারী সরকারে পরিণত হয়েছে।"

ফখরুল বলেন, "এই সরকারের কাছে কেউ নিরাপদ না। গণতন্ত্র নিরাপদ না, মানুষ বিশেষ করে নারীরা নিরাপদ না। আওয়ামী লীগ ও তাদের নেত্রী শেখ হাসিনা এত বেশি অহংকারী হয়ে উঠেছে যে, যখন সব রাজনৈতিক দল বলছে যে, আমরা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই তখন তারা সে কথা উড়িয়ে দিয়ে বলছে, সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হবে। সংবিধানের অধীনে নির্বাচন হতে পারে না। কারণ আপনারা ক্ষমতায় থাকলে নির্বাচন কখনোই সুষ্ঠু হবে না। আমাদের মা-বোনেরা ভোট দিতে পারবে না। গত দুই টার্মে তারা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে নাই। তাদের বিতাড়িত করেছে।"

বিএনপি মহাসচিব বলেন, "এই সরকার জোর করে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে। দেশে গণতন্ত্র না থাকলে নারীদের নিরাপত্তা, অধিকারও নিশ্চিত করা যাবে না। এই সরকার আবার ক্ষমতায় এলে এই দেশের নারী, পুরুষ কোনো মানুষেরই নিরাপত্তা থাকবে না। আমাদের স্বাধীনতা হারাব, সার্বভৌমত্ব হারাব, চিরতরে আমাদের গণতন্ত্র-ভোটের অধিকার চলে যাবে।"