দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সুদের হার ৯ শতাংশ এবং আমানতের সুদের হার ৬ শতাংশ বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সে সময় সুদের হার নয়-ছয় বেঁধে দেওয়া না হলে আজ আমাদের ব্যাংকিং খাত খুঁজে পাওয়া যেত না বলে দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে জমা পড়া চাঁদার টাকা বিনিয়োগ নিয়ে রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।রিজার্ভ বাড়ানোর জন্য কী পদক্ষেপ নেবেন, সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০০৬ সালে রিজার্ভ ছিল ৬ বিলিয়ন ডলার। এটাকে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে গিয়েছিলাম। এখন আছে ১৯ থেকে ২২ বিলিয়ন ডলার।

তিনি বলেন, কোভিড আমাদের জন্য খুবই সমস্যা ছিল। এরপর একেরপর এক চলতেই আছে। আমরাও আনফরচুনেটলি এ থেকে ছাড়া পাইনি। কিন্তু সরকারের হাতে যেসব জায়গা আছে সেগুলো ব্যবহার করছে। এখানে কয়েকটি প্রশ্ন আসবে। এগুলো কিন্তু ঠিক না।মুস্তফা কামাল বলেন, শেরাটন হোটেলে একদিন যখন বক্তব্য রাখছিলাম সেখানে জোর করে আমাকে বলা হচ্ছিল আপনি (সুদহার) নয়-ছয় করতে পারবেন না। যা যা বলার তা বলেছিল। আপনারা ভালো করে নিজেরা নিজের বিবেককে প্রশ্ন করেন, নয়-ছয় যদি না থাকতো তাহলে আজ আমাদের ব্যাংকিং খাত খুঁজে পেতেন না। দেশের মানুষকে, মানুষের খাবার-দাবার কিছু ব্যবস্থা থাকতো না।

তিনি বলেন, অনেক লম্বা সময়ের জন্য খাবারের নিজস্ব ব্যবস্থা আছে। অন্য দেশের তুলনায় আমরা ভালো অবস্থানে আছি। সরকারকে বুদ্ধিমতার সঙ্গে রাজস্ব, সরকারি কাজ এবং দেশের অর্থনীতি চালাতে হবে। এ কাজটি সরকার করে যাচ্ছে। খাবার-দাবারের সংকট থেকে আমরা পরিত্রাণ পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, খাবার নিয়ে এক সময় অনেক টানাপোড়েন ছিল। এখন আর সে অবস্থা নেই, প্রচুর খাদ্য আছে। এর কারণটা হলো দেশের বিজ্ঞানী যারা আছেন কৃষির ওপরে কাজ করেন, তাদের কাছে অনেক কৃতজ্ঞতা। আগে আমরা যে আকার নিয়ে অর্থনীতির বিস্তার ঘটাচ্ছিলাম সেখান অনেক দূর আসছি। এখন খাদ্যশষ্য উৎপাদন ৫ গুণ বেড়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, নয়-ছয় সুদহারের সিদ্ধান্ত ছিল রাজনৈতিক এবং ভুল সিদ্ধান্ত। আমরা রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বোঝাতে সক্ষম হওয়ায় এটা পরিবর্তন করা হয়েছে। বিষয়টি জানিয়ে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন একজন সাংবাদিক।

জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতির প্রত্যেকটা কম্পোনেন্ট ফেক্সিবল, এটা ফিক্সড কিছুই না। কোনো দেশ পাঁচ বছরের অর্থনীতির প্ল্যান একবারে করে না। দুই বছরের একবারে করে না, বছরভিত্তিক করে। গভর্নর মহোদয় যদি মনে করেন যে এটা ঠিক হয় নাই, এটা ভালো, এটা উনার ব্যাপার। ব্যক্তি হিসেবে প্রত্যেক ব্যক্তির চিন্তা আছে, চিত্তাভাবনা আছে, সেই ভাবনা মোতাবেক তিনি এগুবেন। হয়তো উনি ভাবছেন, এটা যদি করা হতো, হয়তো ভালো হতো। কিন্তু কোনটা ভালো হতো কেউ বলতে পারবে না।

জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক দাম নিয়ে এক প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগে ভারত থেকে অনেক খাদ্যদ্রব্য আসতো। এখন খাদ্যদ্রব্য আসে না, কোনো ডিমও আসে না, কোনো কিছু আসে না। আগে তারা দিতে পারত, এখন দিতে পারে না। এ যদি অবস্থা হয়, আমাদের ব্যবস্থা করতে হবে। এটা কিছুদিন সহ্য করতে হবে। মূল্যস্ফীতি কমানোর চেষ্টা করছি।আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ পাওয়া নিয়ে করা আরেক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, যে তারিখে বলা আছে আইএমএফ সেই তারিখেই পেমেন্ট করবে, না পাওয়ার কোনো কারণ নেই।