শুভ জন্মদিন ফুটবল সম্রাট পেলে
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: সর্বকালের সেরা ফুটবলার কে— পেলে নাকি ডিয়েগো ম্যারাডোনা, তা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। তবে ‘কালোমানিক’ খ্যাত পেলেকে ফুটবল সম্রাট বললে ভুল বলা হবে না। ক্রীড়াজগতের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র ব্রাজিলিয়ান এই কিংবদন্তি। গতবছর পরপারে পাড়ি জমানো এই ফুটবল কিংবদন্তির ৮৩তম জন্মদিন আজ।
১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রাজিলের সাও পাওলো শহরের ট্রেস কোরাকয়েসের এক বস্তিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন পেলে। তার মা-বাবা নাম রেখেছিলেন বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসনের সঙ্গে মিল রেখে। পেলের পুরো নাম ‘এডসন অরান্তেস দো নাসিমেন্তো’। অবশ্য বস্তির বন্ধুরা পেলেকে চিনত ‘ডিকো’ নামে। গলিতে ফুটবল খেলে খুব ছোট বেলাতেই দৃষ্টিকাড়েন পেলে। অর্থাভাবে অনুশীলনের জন্য একটি বলও কিনতে পারতেন না তিনি। তাই পুরোনো মোজায় খবরের কাগজ মুড়িয়ে ফুটবল বানিয়ে খেলতেন। তাঁর প্রতিভা দেখে চোখে পড়ে যায় সান্তোসের গ্রেট ওয়ালডেমার ডি ব্রিটোর। পেলে জীবনের মোড় ঘুরে যায় তখনই। সে সময় পেলের বয়স ছিল ১৫ বছর। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সান্তোস ক্লাবে, যোগ দেন ‘বি’ টিমে। সহজাত প্রতিভা দেখিয়ে এক বছরের মধ্যেই মূল দলে নিজের জায়গা করে নেন পেলে। আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
১৯৫৮ বিশ্বকাপেই বাবাকে দেয়া কথা রেখেছিলেন পেলে। মারিও জাগালো, ভাভা, দিদি, গারিঞ্চাদের সঙ্গে কিশোর পেলে ব্রাজিলকে এনে দেন তাদের প্রথম বিশ্বকাপ। ফাইনালে সুইডেনের বিপক্ষে তার গোল বিশ্বকাপ ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা গোল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৬২ বিশ্বকাপটা জিতলেও তাতে খুব বেশি অবদান রাখা হয়নি পেলের। ইনজুরিতে মাঠের বাইরে ছিলেন বেশিরভাগ সময়। আর সত্তরে তো হাজির হয়েছিলেন ইতিহাসে সেরা দল নিয়ে। অলস্টার সেই দলে ছিলেন কার্লোস আলবার্তো, রিভেলিনো, জাইরজিনহোদের নিয়ে গড়া সেই ব্রাজিলকে একবাক্যের বিশ্বের সেরা দল মেনে নেন বোদ্ধারা। মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত সেই আসরেও শিরোপা জেতেন পেলে।
ক্যারিয়ারে এক হাজার ৩৬৬ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন এক হাজার ২৮৩টি। আর ব্রাজিলের জার্সিতে ৯২ ম্যাচে ৭৭টি গোল করেন তিনি। কদিন আগেই যে রেকর্ড ভেঙেছিলেন নেইমার। অনেকেরই ধারণা, পেলে ইচ্ছে করেই ইউরোপের প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে যাননি। তবে বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। পেলের অনন্য ফুটবলশৈলীর কথা বিবেচনায় নিয়ে তাকে জাতীয় সম্পত্তি ঘোষণা করেছিল নিজ দেশের সরকার। আশঙ্কা ছিল, ইউরোপিয়ানদের কড়া ট্যাকেলের কারণে নষ্ট হয়ে যেতে পারে তার ক্যারিয়ার। কিংবদন্তি এই ফুটবলার পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন গত বিশ্বকাপের সময়ে। চিরবিদায়ের আগে দেখেছেন ব্রাজিলের হার। একরাশ কষ্ট নিয়েই বিদায় বলেছিলেন পৃথিবীতে।