চট্টগ্রাম অফিস: জঙ্গি সন্দেহে ফেইসবুকে অশ্লীল ও ধর্মবিরোধী লেখালেখির অভিযোগে পুলিশ চট্টগ্রামে দুই কিশোরকে গ্রেফতার করেছে। তবে অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবিরে যোগ না দেওয়ায় শিবির কর্মীরাই এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ওই দুইজনকে ষড়যন্ত্র করে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে।

গ্রেফতারকৃত দুইজনই আগামীকাল শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। গ্রেফতারকৃতরা হলেন চট্টগ্রাম কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী কাজী মাহমুদুর রহমান রায়হান রাহী (১৯) ও উল্লাস দাস (১৮)।

গত ৩১ মার্চ চকবাজার এলাকা থেকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। ১ মার্চ পুলিশ আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠায়। ওই দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগ এনেছে পুলিশ।

অভিযোগ উঠেছে ইসলামী ছাত্রশিবিরকর্মীদের ইন্ধনে পুলিশ ওই দুই কিশোরকে গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতারকৃত রাহীর মামা সাইদুর রহমান শামীম অভিযোগ করে বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরে যোগ না দেওয়ায় শিবিরকর্মীরাই পরীক্ষার আগে ওই দুই ছাত্রকে ষড়যন্ত্র করে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে।

গণজাগরণ মঞ্চের চট্টগ্রামের সমন্বয়কারী আরিফুর রহমান জানান ‘মুক্তমনা’ ব্লগের একটি পোস্টকে ঘিরে শিবির দুই ছাত্রকে নাস্তিক হিসেবে প্রমাণ করতে চেয়েছে। এবং তাদের পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও জানান, রাহী ও উল্লাস গত ৩১ মার্চ দুপুরে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে বেরিয়ে পাশের প্যারেড ময়দান পেরিয়ে টাক শাহ মিয়া মসজিদের সামনে পৌঁছলে তাদের গতিরোধ করে শিবির কর্মীরা। পরে তাদের পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া হয়।

নগর পুলিশের উপকমিশনার বাবুল আক্তার জানান, রবিবার দুই যুবককে প্যারেড মাঠের পূর্ব পাশে টাক শাহ মিয়া মসজিদের সামনে থেকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিয়েছে জনতা। তাদের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা হয়েছে।

রাহীর বাবা মাহফুজুর রহমানের অভিযোগ, শিবিরে যোগ না দেওয়ার জন্যই তার ছেলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ অভিযোগ আনা হয়েছে। সে শিবিরে যোগ দিতে রাজি হয়নি। তাই তাকে পরীক্ষা দিতে দেবে না বলে হুমকি দেয়। পরীক্ষার প্রবেশপত্র আনতেই সে সেদিন কলেজে গিয়েছিল।

চকবাজার থানার ওসি আতিক আহমেদ জানান, গ্রেফতারকৃত দুইজনই ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে লেখালেখি করে আসছিল।

(দ্য রিপোর্ট/কেএইচএস/এমএটি/এএল/এপ্রিল ৩, ২০১৪)