দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: একমাসের বেশি ধরে চলমান যুদ্ধের জন্য ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এবং ফিলিস্তিনি ইসলামিক গোষ্ঠী হামাস—উভয় পক্ষের বিরুদ্ধেই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার দপ্তর।

বুধবার গাজা ও মিসর উপত্যকার সীমান্তপথ রাফাহ ক্রসিং পরিদর্শনে গিয়ে এ অভিযোগ আনেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভোলকের তুর্ক। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম রয়টার্স। তিনি বলেছেন, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী যে সহিংসতা চালিয়েছে তা কেবল ঘৃণ্য, নিষ্ঠুর এবং বেদনাদায়কই নয়; বরং যুদ্ধাপরাধ। কারণ, তারা এখনও শতাধিক জিম্মিকে আটকে রেখেছে। একইভাবে সেই হামলার জবাবে ইসরায়েলি বাহিনী গত এক মাস ধরে গাজায় বোমা বর্ষণ ও সাধারণ ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের মাধ্যমে যে সামষ্টিক শাস্তি দিয়ে চলেছে, তা ও যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে পড়ে বলেও জানান তিনি।

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চলানোর পর সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। সেই অভিযান এখনও চলছে। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। এছাড়া হামলার প্রথম দিনই ইসরায়েল থেকে অন্তত ২৩৪ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে গেছে হামাস। অন্যদিকে, ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১০ হাজার। এই নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি শিশু ও নারী।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৫৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর এই প্রথম এত বড় মাত্রার সংঘাত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের আল-আকসা অঞ্চলে। ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল করার আগ পর্যন্ত এই যুদ্ধ তারা থামাবে না। যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা ইসরায়েলের এই অবস্থানকে সমর্থনও করেছে। তবে সমর্থন জানানোর পাশাপাশি গাজায় মানবিক বিরতি ঘোষণার জন্য ইসরায়েলকে চাপও দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্ব।জাতিসংঘের হাই কমিশনার বলেন, ইসরায়েল, গাজা ও পশ্চিম তীরের বাসিন্দারা যে অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তাকে এই অঞ্চলের গত ৫৬ বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্যায় বলা যায়।