আমির হামজা , দ্য রিপোর্ট: সরকারী স্বার্থ রক্ষা করে আবার বিটিএমসি ১৬ টি বন্ধ মিলগুলোর পুনরায় ইজারা দেওয়া হচ্ছে। এর জন্য  মিল গুলোর ইজারা পদ্বতিতে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পুনঃচালুর লক্ষ্যে ইজারার শর্তাবলী পদ্বতি ও ইজারা প্রস্তাব চূড়ান্তকরণের জন্য দশ সদস্যের একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় ওয়াকিং কমিটি গঠন করা হয়েছে । 

রএই ওয়াকিং কমিটির আহবায়ক হচ্ছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব। আজ বন্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোঃ আলমগীর হোসনে স্বাক্ষরিত এর সংশ্লিষ্ট একটি প্রঞ্জাপন প্রকাশ করেছে । এর প্রঞ্জাপনে বলা হয়েছে মিল গুলোর ইজারা প্রস্তাবসমূহ চূড়ান্ত করার সুপারিশ করা হবে । ইজারার বিপরীতে বিভিন্ন প্রস্তাব নিষ্পত্তির জন্য বিভিন্ন পরার্মশ দিবে এ কমিটি।

তবে ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের সময় বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশনের (বিটিএমসি) বন্ধ মিল চালুর বিষয়ে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিটিএমসির বন্ধ মিলগুলো পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। বিটিএমসির ২৫টি মিলের ৬৩৬ দশমিক ৩৮ একর জমি অব্যবহূত অবস্থায় পড়ে আছে। অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ১৬টি মিল পিপিপির মাধ্যমে চালু করার অনুমোদন দেয়। কিন্তু এর মধ্যে ১৪টি মিল চালু করার কোনো প্রক্রিয়াই শুরু করতে পারেনি । সম্প্রতি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় চাপ প্রয়োগ করে বিক্রি হওয়া মিল চালুর বিষয়ে সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিটিএমসির ১৬টি মিল চালুর সর্বশেষ বিষয় নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। সেখানে বলা হয়, প্রথম পর্যায়ে ঢাকার ডেমরায় অবস্থিত আহমেদ বাওয়ানী টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড ও গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড শীর্ষক প্রকল্প দুটি পিপিপির মাধ্যমে পরিচালনার জন্য অনুমোদন দেয়া হয়। ২০১৭ সালের ১৪ জুন অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। আন্তর্জাতিক টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ওরিয়ন কনসোর্টিয়াম কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিল পরিচালনার জন্য নির্বাচিত হয়। ২০১৯ সালের ২১ জুলাই ওরিয়ন কাদেরিয়া টেক্সটাইলসের সঙ্গে বিটিএমসির চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর কাদেরিয়া টেক্সটাইলের জমি গ্রিন ফিল্ড হিসেবে ওরিয়নের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মিলের সীমানা প্রাচীর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের বিস্তারিত পরিকল্পনা অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আহমেদ বাওয়ানী টেক্সটাইল মিলটি পায় কনসোর্টিয়াম অব তানজিনা ফ্যাশন লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালের ২৫ জুন মিলটি পরিচালনা করতে তাদের সঙ্গে বিটিএমসির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। মিলটির প্রাইভেট পার্টনার আপফ্রন্ট প্রিমিয়াম বাবদ ৭ কোটি টাকা এবং মিলের বিদ্যমান স্থাপনা ও মেশিনারিজ বাবদ ৬ কোটি ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ মিলটি পরিচালনা করতে ১৩ কোটি ৫ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হতো তানজিনা ফ্যাশনকে। বিটিএমসি। প্রতিবেদনে বলা হয়, পিপিপি চুক্তিতে আহমেদ বাওয়ানী টেক্সটাইল মিলের জন্য টাকা পরিশোধ না করায় বাস্তবায়ন দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

টাঙ্গাইলের গোড়াইতে অবস্থিত টাঙ্গাইল কটন মিলস লিমিটেড পিপিপির মাধ্যমে পরিচালনার জন্য ২০১৮ সালের ৭ ফেবæয়ারি অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন পায়। পরে ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। তবে দরপত্র আহ্বানের পর স্বাধীনতার আগে মিলের ২০ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা দাবি করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে একটি পক্ষ। তখন হাইকোর্ট থেকে টেন্ডার কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। মামলা চলমান থাকায় প্রকল্প বাস্তবায়ন দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

অবশিষ্ট ১৩টি মিল আর আর টেক্সটাইল মিলস, দোস্ত টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, মাগুরা টেক্সটাইল মিলস লি., রাজশাহী টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, আমিন টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, দি এশিয়াটিক কটন মিলস লিমিটেড, জলিল টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, রাঙ্গামাটি টেক্সটাইল মিলস, বেঙ্গল টেক্সটাইল মিলস লি., সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, দিনাজপুর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, দারোয়ানী টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড এবং আফসার কটন মিলস লিমিটেড পিপিপির মাধ্যমে পরিচালনার জন্য নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল ।