বেরোবিতে পাশ দেখানো হলো ফেল ১২ শিক্ষার্থীকে।
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক, বেরোবি ক্যম্পাস।
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) পরীক্ষায় চূড়ান্ত ফলাফলে ফেল দেখানো ১২ শিক্ষার্থীকে পাশ দেখানো হয়েছে। ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের ৩য় বর্ষের ১ম সেমিস্টার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে এমনটি ঘটেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধান অনুযায়ী প্রতিটি কোর্সে মূল্যায়ন নম্বর ১০০। এর মধ্যে ধারাবাহিক মূল্যায়ন ৫০ আর ফাইনাল পরীক্ষায় ৫০ নম্বর। এ ১০০ নম্বরের মধ্যে ফাইনাল পরীক্ষার ফরম পূরণের আগেই ৫০ নম্বরের ধারাবাহিক মূল্যায়নের কার্যক্রম শেষ করে তা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দিতে হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিভাগের ১২ শিক্ষার্থীর ফল পুনর্মূল্যায়নের নামে ‘নিরীক্ষা কমিটি’ গঠন করে ওই কোর্সে নম্বর বৃদ্ধি দেখিয়ে ফলাফল বদল করেছে। এর আগে ১৩ মার্চে প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফলে ওই ১২ শিক্ষার্থীকে অকৃতকার্য দেখানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর এ ফলাফল প্রকাশের পর অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা পাশ করানোর দাবিতে সেদিন ক্যাম্পাসে মধ্যরাত পর্যন্ত আন্দোলন করেন। স্মারকলিপি দেন উপাচার্য ও বিভাগের প্রধানকে। পরে উপাচার্যের আশ্বাসে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন তারা। এরপর উপাচার্য হাসিবুর রশীদ একটি নিরীক্ষা কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নম্বর বেশি দেখিয়ে ওই শিক্ষার্থীদের কৃতকার্য দেখিয়ে নতুন রেজাল্ট সিট পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে পাঠানো হয়। ৪ জুন ওই সেমিস্টারের ‘সংশোধিত ফলাফল’ প্রকাশ করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।
এদিকে, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন ঘটনা ক্যাম্পাসে জানাজানি হলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষকরা। তৎকালীন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মতিউর রহমান জানান, এ ঘটনা নিজরবিহীন। চূড়ান্ত ফলাফল হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় তা প্রকাশের সুযোগ নেই। বিষয়টি আমার কাছে এলে আমি সরাসরি না করে দিই। পরে উপাচার্য একটি নোট দেন তাতে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান মিজানুর রহমানকে নিরীক্ষণ কমিটির প্রধান করা হয়। এখানে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কোনো দায় নেই।
বিভাগটির প্রধান ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, এটা মূলত কোর্স শিক্ষক ড. আহসান হাবীবের অনিচ্ছাকৃত ভুল। ধারাবাহিক মূল্যায়নের প্রথম পরীক্ষায় অনেকেই নম্বর কম পেয়ে অনুরোধে আবার তিনি আবার পরীক্ষা নেন। কিন্তু পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে চূড়ান্ত ফলাফল সিটে তিনি প্রথম পরীক্ষার নম্বর দিয়েছেন। এ কারণে সমস্যা হয়েছে। চূড়ান্ত রেজাল্ট পুনরায় দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও সংশোধনের জন্য ১৫ দিন সময় থাকে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে সেটা নির্ধারিত সময়ের আগেই করেছি।
বিষয়টি জানতে ড. আহসান হাবীবের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তিনি রাজি হননি। এ নিয়ে কোনো কথা বলবেন না বলে জানিয়ে দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি শরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি জানি না।
একেএস/এএইচ/এসকে/দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টি ফোর ডট কম।