দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: দেশে ব্যবসারত হাতে গুণা কয়েকটি বিমা কোম্পানির গ্রাহকদের বিমা দাবি পরিশোধ না করায় পুরো খাতে রয়েছে আস্থার সংকট। যেসব দুর্বল কোম্পানি আছে তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার না চালিয়ে কিভাবে সেগুলো মূলধারায় নিয়ে আসা যায় সেদিকে নজর দেওয়া উচিত।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অডিটরিয়ামে ইন্স্যুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরামের (আইআরএফ) সদস্যদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত বক্তারা এসব কথা বলেন।

‘বিমা কোম্পানি আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের সভাপতি ও পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির প্রধান মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বি এ ইউসুফ আলী।

ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও মো. কাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে আইআরএফ সভাপতি গাজী আনোয়ারুল হক, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমনসহ সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বি এ ইউসুফ আলী বলেন, কয়েকটি বিমা কোম্পানি যথা সময়ে গ্রাহকের বিমা দাবি পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় আস্থার সংকটে পড়েছে বিমা খাত। বিমা টাকা কোম্পানিগুলোর কাছে আমানত হিসেবে থাকে। কিন্ত অনেক কোম্পানি ‘ইসলামী ইন্স্যুরেন্স’ নাম দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা আর ফেরত দিচ্ছে না, যা এক প্রকার গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা।

তিনি বলেন, খারাপ কোম্পানিগুলোকে ভালো করার উদ্যোগ নিতে হবে। কোন একটি কোম্পানি একদিনেই দুর্বল কোম্পানিতে পরিণত হয় না। যখন থেকেই দেখা যাবে কোনো কোম্পানির গ্রাহকদের দাবি পরিশোধ করতে পারছে না তখনই নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত সেই কোম্পানিতে গ্রাহকের টাকা কোথায় আছে সেটি খুঁজে বের করা।

তিনি আরও বলেন, বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) নানা আইনকানুনের মাধ্যমে এ খাতের শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। নিয়ন্ত্রণ সংস্থার পাশাপাশি কোম্পানিগুলোকেও গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে আন্তরিক হতে হবে।

মো. কাজিম উদ্দিন বলেন, বিমা খাতের সঠিত তথ্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো দায়িত্ব সাংবাদিকদের। কিন্ত তার আগে এ খাতের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান থাকা আবশ্যক। একমাত্র প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই তা করা সম্ভব।

বিমা দাবি পরিশোধ না করলে কোনো কোম্পানির পক্ষেই গ্রাহকের আস্থায় পৌঁছানো সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ন্যাশনাল লাইফে বিমা দাবির এক ঘণ্টার মধ্যে গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

মো. কাজিম উদ্দিন বলেন, প্রতিষ্ঠান পর থেকে এখন পর্যন্ত ন্যাশনাল লাইফ ৬১ লাখ গ্রাহককে বিমা সেবার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে। সর্বমোট প্রিমিয়াম আয় হয়েছে ১৬ হাজার ১৯ কোটি টাকা। লাইফ ফান্ডের পরিমাণ ৪ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা। বিনিয়োগ করা হয়েছে ৫ হাজার ৩৬ কোটি টাকা।

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকদের বিমা কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন ন্যাশনাল লাইফের সিএফও প্রবীর চন্দ্র দাস।