দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: টানা ৪৮ ঘণ্টার শেষ দিনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বৃহস্পতিবার সকালে পৃথকভাবে এ কর্মসূচি পালন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জামায়াত। রাজধানীর ডেমরা, শনিরআখড়া, সূত্রাপুর, খিলগাঁও, বনশ্রী, হাজারীবাগ এলাকায় মিছিল করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের নেতাকর্মীরা। 

 

এ সময় জামায়াতে কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. মু. আবদুল মান্নান বলেন, কোনো তাবেদারি সরকারকে বাংলাদেশের জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। জনগণকে ধোঁকা দিয়ে আর কোনো পাতানো নির্বাচন দেশে করতে দেওয়া হবে না। সভ্য পৃথিবীতে ভোটাধিকার চাওয়া লজ্জাজনক। ২০১৪ সাল ও ২০১৮ সালের মতো একতরফা পাতানো নির্বাচন এ দেশের জনগণ মানবে না। প্রশাসনের কতিপয় পথভ্রষ্ট ব্যক্তিরা সরকারের নীল নকশা বাস্তবায়নে মরিয়া।

তিনি আরও বলেন, এ সরকার জনগণের হৃদয় থেকে ছিটকে গিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যেতে চায়। আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে সরকার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ রুদ্ধ করছে। দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করা যাবে না। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হবে মনে করে সরকার গণতন্ত্র হত্যা করে চলেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বাংলাদেশের মানুষের আজ বেঁচে থাকাই কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে জামায়াতে ইসলামী এ দেশের মাটি ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে। ইনসাফ তথা ন্যায় প্রতিষ্ঠায় আমরা কখনো থেমে যাইনি, আমাদের থামানো যাবেও না ইনশাআল্লাহ।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরার সদস্য আবু আম্মার, এসএম শামসুল বারী, মু'তাসিম বিল্লাহ, নুর উদ্দিন এবং ছাত্রনেতা মুহিবুল্লাহ হোসাইনীসহ জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

এ ছাড়া মহাখালী, উত্তরা, বাড্ডা, কালসী, মিরপুর, মোহাম্মদপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াত। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘ভোটচোর ও বাকশালীদের পতনের লক্ষ্যে বীর জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে এসে সরকারকে লালকার্ড দেখিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তারা এই ফ্যাসিবাদী ও মাফিয়া সরকারের পতন এবং কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বে না। তিনি সরকারকে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে জনতার দাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান। অন্যথায় তাদের অপমানজনকভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে। মিরপুর-১ এ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিশে শুরার সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ, আব্দুর রাকিব, জসিমউদ্দিন ও বিপ্লব এবং ছাত্রনেতা হিশাম, ইমরান ও মাহদী প্রমুখ।

মাহফুজুর রহমান বলেন, সরকার জামায়াতের জনপ্রিয়তা আতঙ্কিত হয়েই সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে দলের নিবন্ধন বাতিল করেছে। তারা জামায়াতকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে জঘন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। কিন্তু তাদের সে ষড়যন্ত্র কখনই সফল ও সার্থক হবে না; বরং সব বাধাবিপত্তি ও জুলুম-নির্যাতন উপেক্ষা করেই জামায়াত কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাবে। তিনি সরকারকে ষড়যন্ত্র বন্ধ করে অবিলম্বে দলের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। অন্যথায় রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণই সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করে জামায়াতে নিবন্ধন ফিরিয়ে আনবে।