দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের জেরে গুয়েতেমালার শতাধিক পার্লামেন্ট সদস্যের (এমপি) ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১০০ জনেরও বেশি এমপিসহ গুয়েতেমালার প্রায় ৩০০ নাগরিকের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানায়।

উল্লেখ্য, গুয়েতেমালার পার্লামেন্ট কংগ্রেসে মোট সদস্য ১৬০ জন। অর্থাৎ দেশটির পার্লামেন্ট সদস্যদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশযুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, যারা গুয়েতেমালায় গণতন্ত্র ও আইনের শাসন রক্ষা এবং জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান করা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র গুয়েতেমালার গণতন্ত্রকে অবজ্ঞা করে এমন ব্যক্তির ওপর এই ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ করার উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।

আফগানিস্তানের রহমানি পরিবার, ৪৪ কোম্পানির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
আন্তর্দেশীয় দুর্নীতির অভিযোগে আফগানিস্তানের পার্লামেন্টের সাবেক স্পিকার ও ব্যবসায়ী মির রহমান রহমানি এবং তার ছেলে আজমাল রহমানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া তাদের দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ৪৪টি কোম্পানিকেও যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থবিষয়ক দপ্তর সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে ওই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থবিষয়ক দপ্তর বলেছে, মির রহমান রহমানি ও তার ছেলে আজমাল রহমানির পরিবারের সদস্যরা নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত। নিষেধাজ্ঞার ঘোষণায় আজমাল রহমানির সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের বাড়ির ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে। মির রহমান রহমানি ও তার ছেলে আজমাল রহমানি আফগানিস্তান ছাড়াও হাঙ্গেরি, বেলজিয়াম, সাইপ্রাস, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের নাগরিক। বিনিয়োগের মাধ্যমে তারা অন্য দেশে নাগরিকত্ব নিয়েছেন।

এদিকে রহমানি পরিবারের দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত কোম্পানিগুলোর ২১টি জার্মানির, আটটি সাইপ্রাসের, ছয়টি সংযুক্ত আরব আমিরাতের। এছাড়া দুটি করে আফগানিস্তান ও অস্ট্রিয়ার এবং একটি করে নেদারল্যান্ডস ও বুলগেরিয়ার কোম্পানি রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টায় গতকাল দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে। পাঁচ দিনের ওই সম্মেলন শুরুর প্রথম দিনই যুক্তরাষ্ট্র ওই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশও অংশ নিচ্ছে। সম্মেলনে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানাতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিভাগের সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউ গত আগস্টে বাংলাদেশ সফর করেন। সে সময় তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, নিষেধাজ্ঞা দুর্নীতি দমনের অন্যতম হাতিয়ার। তবে যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নিষেধাজ্ঞাকে ব্যবহার করে না।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থবিষয়ক দপ্তর গতকাল দুই ব্যক্তি ও ৪৪ কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মানবাধিকারের লঙ্ঘনের জবাবদিহিবিষয়ক গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি আইন প্রয়োগ করে। বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতি প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্র এই আইন প্রয়োগ করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থবিষয়ক দপ্তর বলেছে, আফগান নাগরিক মির রহমান রহমানি ও তার ছেলে আজমাল রহমানি তাদের কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে দুর্নীতি করেছেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র অর্থায়িত উদ্যোগের লাখ লাখ ডলারের অপব্যবহার হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তরের সন্ত্রাস ও আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগের আন্ডারসেক্রেটারি ব্রায়ান ই নেলসন বলেন, ব্যক্তিস্বার্থে ক্ষমতার অপব্যহার যারা করতে চায় তাদের জবাবদিহি নিশ্চিতের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অর্থবিষয়ক দপ্তরের অংশ হিসেবে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতির চক্র ভাঙাসহ দুর্নীতিবাজদের জবাবদিহির জন্য অর্থবিষয়ক দপ্তর তার হাতিয়ারগুলোর ব্যবহার অব্যাহত রাখবে।

এদিকে, রহমানি পরিবারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত হবে। নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কেউ লেনদেন বা ব্যাবসায়িক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হলে তারাও শাস্তির শিকার হতে পারে।