সারা দেশে শীত বেড়েছে
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: অগ্রহায়ণের শেষদিকে সারা দেশে শীত বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে উত্তরাঞ্চলে। সোমবার নওগাঁর বদলগাছীতে ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
বুধবার থেকে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কোনো কোনো এলাকার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে আসবে। ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত এটি বজায় থাকবে। এ সময়ে শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও ঢাকায় তীব্র শীত অনুভূত হবে। কারণ,
এ সময়ে রাজধানীতে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে আসবে। আবহাওয়া অফিস সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম আজাদ যুগান্তরকে বলেন, ১৩ থেকে ১৮ ডিসেম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে। এ সময়ে দিনাজপুর, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, গাইবান্ধা, যশোরসহ বিভিন্ন এলাকার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে আসবে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের পর থেকে গত কয়েকদিনে ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় শীত বেড়েছে। এ সময়ে ঢাকায় রাতের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি কমেছে। যুগান্তর প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে উঠে এসেছে সারা দেশের পরিস্থিতি।
রংপুর:
ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে মহানগরীসহ পুরো রংপুর অঞ্চল। এ কারণে তিন দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। দু-একবার সূর্য উঁকি দিলেও ঢাকা পড়েছে কুয়াশার আড়ালে। সোমবার মহানগরীর দর্শনা, তামপাট, মেডিকেল মোড়, শাপলা চত্বর, জেলার পীরগাছা, হারাগাছ, নব্দিগঞ্জ ও সদরের পালিচড়া, শ্যামপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় সড়কে মানুষের উপস্থিতি কম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে হাটবাজারগুলোয়। এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে রংপুর মহানগরীসহ এ অঞ্চলের কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও নীলফামারীর সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনগুলো চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। শীতে অসুস্থ নারী, পুরুষ ও শিশুদের জরুরি চিকিৎসার জন্য প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গুরুত্বসহকারে সেবা দিতে মেডিকেল টিমকে নির্দেশ দেওয়া রয়েছে।
নওগাঁ:
সোমবার নওগাঁর বদলগাছীতে তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা হামিদুল হক বলেন, বৃষ্টি ও উত্তরের হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় কয়েকদিন ধরেই তাপমাত্রা নিম্নমুখী। রোববার সন্ধ্যা থেকেই নওগাঁয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। শীতে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
দিনাজপুর:
দিনাজপুরের হিলিসহ আশপাশের এলাকাগুলোয় দুদিন ধরে শীত জেঁকে বসেছে। ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে চারপাশ। হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে ট্রেনসহ সব যানবাহন। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হচ্ছে না ঘর থেকে। অতিরিক্ত শীতের কারণে বিপাকে পড়েছেন বয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুরা। হাসপাতালগুলোয় বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন-আয়ের মানুষ। কষ্ট হলেও সংসারের খরচ জোগাতে এ ঘন কুয়াশার মধ্যেই বের হতে হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম:
শীত ও কুয়াশার দাপটে হিমালয় পাদদেশীয় এ জেলায় জনজীবন বিপর্যস্ত। দিনরাত কুয়াশায় ঢেকে থাকছে গোটা জনপদ। সন্ধ্যা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত বৃষ্টির মতো পড়ছে ঘন কুয়াশা। দিনেও হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলতে দেখা গেছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এখানকার শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষ। রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, ২০ ডিসেম্বরের পর এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এদিকে কুড়িগ্রামের সীমান্তঘেঁষা ফুলবাড়ীর লোকজন বর্তমানে ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন না। রাতে ও সকালে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরছে। তাতে রাস্তাঘাট ভিজে গেছে। তবে শীত উপেক্ষা করে অনেকেই ছুটছেন কাজের সন্ধানে। মাঠে কাজ করছেন কৃষক।