রাজস্ব আয় বৃদ্বি এবং রিজার্ভ ধরে রাখার উপদেশ আইএমএফের
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: অর্থনীতির শৃঙ্খলার স্বার্থে নির্বাচনের বছরে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের শর্তের কথা উল্লেখ্য করে বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করতে বলেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। অন্য যে সব বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে বলেছেন তা হচ্ছে কর রাজস্ব বৃদ্ধি এবং ভর্তূকি কমানো, মূল্যস্ফীতি কমানোসহ মুদ্রানীতি কাঠামোর আধুনিকীকরণ করা এবং ব্যাংক খাতে তদারকি বৃদ্ধিসহ আর্থিক খাতে সংস্কার আনা সম্ভব হয়।
শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফ এ কথা বলেছে। সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত ও সমাপনী বক্তব্য দেন আইএমএফের এশীয় ও প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দ। এর আগে বাংলাদেশের ওপর কান্ট্রি প্রতিবেদন প্রকাশ করে আইএমএফ। ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও করণীয় নিয়ে পর্যালোচনা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাব দেন রাহুল আনন্দ।
আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য গত জানুয়ারিতে অনুমোদন করা ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচির দ্বিতীয় কিস্তি ৬৯ কোটি ডলার ছাড় করে ১২ ডিসেম্বর। এ উপলক্ষে আইএমএফের এশীয় ও প্যাসিফিক বিভাগ ভার্চুয়াল এ সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করে। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে আইএমএফের প্রতিনিধি জয়েন্দু দে।বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে জবাবে রাহুল আনন্দ বলেন, এ ধরনের বিষয় নিয়ে আইএমএফ কোনো কথা বলে না।
বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ বাস্তবায়নের জোর দেওয়া হয়েছে, কারণ দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রতীক হিসেবে ধরা হয়ে থাকে । বাংলাদেশ গত মার্চ শেষের থেকেই ১০ মাস ধরেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই আইএমএফের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে যে অব্যাহতি চেয়েছিল বাংলাদেশ, সংস্থাটি তা অনুমোদন করেছে। রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না করার কারণ হিসেবে সরকার আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপণ্য আর জ¦ালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়া দেখিয়েছে। সরকার আমদানি ব্যয় কমিয়ে নিয়ে আসার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল । চলতি ডিসেম্বর শেষে রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে নতুন করে। আইএমএফ বলেছে, ডিসেম্বর শেষে নিট রিজার্ভ থাকার কথা ছিল ২৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। এখন তা ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার থাকলেই হবে।
আইএমএফ আরও জানিয়েছে, অক্টোবরে দেশের নিট রিজার্ভ ছিল ১৫ দশমিক ৯ বিলিয়ান ডলার, আর গ্রস রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৩ বিলিয়ান ডলার।
জুনের নিট রিজার্ভ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুনে ২৩ দশমিক ৭ বিলিয়ান ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে নিট রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৫ বিলিয়ান ডলার।সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফ বলেছে, সরকার সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতি কঠোর করেছে, মুদ্রা বিনিময় হার নমনীয় করার অনুমতি দিয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের প্রচেষ্টা সন্তোষজনকই এবং আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির বেশির ভাগ লক্ষ্যমাত্রা ও সংস্কারের প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশ পূরণ করেছে।
ভালো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য বেসরকারি খাতের মাধ্যমে পুঁজিবাজারকে গভীর করার পরামর্শ দেন রাহুল আনন্দ।