৬০ প্রার্থীর সঙ্গে তৃণমূল বিএনপির বেইমানির অভিযোগ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৬০ প্রার্থীর সঙ্গে তৃণমূল বিএনপি বেইমানি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তারা বলেছেন, দলের চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ও মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার বেইমানি করেছেন। তারা নির্বাচনী মাঠে নামিয়ে এখন যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক আলোচনায় ৬০ প্রার্থীর পক্ষে এ অভিযোগ জানানো হয়।
এসময় তৃণমূল বিএনপি থেকে যশোর-৫ আসনের প্রার্থী মোস্তফা গণি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে একাত্মতা ঘোষণা করে যে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রত্যয় ব্যক্ত করতে যাচ্ছি। সেখানে প্রচণ্ড বাধা সৃষ্টি করেছেন শমসের ও তৈমুর আলম খন্দকার। তারা আমাদের সঙ্গে নজিরবিহীন অসমন্বয় করে, বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। আমাদের অভিভাবক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী আপনি এর বিচার করুন। আমরা দলের কোনো বিচ্ছিন্ন অংশ নই।
তিনি বলেন, আপনারা যদি আজকে শমসের ও তৈমুর আলমকে জিজ্ঞেস করেন তারা বলবে, দলে বিচ্ছিন্ন অংশ ষড়যন্ত্র করছে। আমি মেজর গণি বলতে চাই, আমরা দলের কোনো বিচ্ছিন্ন অংশ নই। দলের যারা অবহেলিত সংসদ সদস্য প্রার্থী তাদের পক্ষ থেকে কথা বলতে দাঁড়িয়েছি। তৈমুর-শমসের ও অন্তরা হুদা আমাদের নির্বাচনের মাঠে দাঁড় করিয়ে যে তামাশা করছেন, জাতির কাছে তার হিসাব দেন।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি আমাদের সমস্যা সমাধান না করেন তাহলে আমরা কঠোর হতে বাধ্য হবো এবং আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হবো।
ময়মনসিংহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী দীপক চন্দ্রগুপ্ত বলেন, আমাদের দলের চেয়ারম্যান মহাসচিব শুরু থেকেই বলেছেন সবপ্রকার সাহায্য সহযোগিতা আমাদের করবেন। গত কয়েকদিন আগে ২৬ তারিখে তারা আমাকে ডেকে এনে বসিয়ে রেখেছেন। সেদিন থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। নির্বাচনের দিক নির্দেশনা তাদের কাছ থেকে পাচ্ছি না। কি করবো না করবো, কিছুই বুঝতে পারছি না। এতিমের মতো অবস্থায় আছি। আমরা মাঝ পথে এসে জানতে পেরেছি তারা অন্য দলের সঙ্গে সম্পর্কিত হয়ে নির্বাচন বানচাল করার জন্য চেষ্টা করছে। আমাদের নির্বাচনী যে ফান্ড, সেটারও কোনো খবর পাচ্ছি না। আমাদের সাহায্য সহযোগিতা না করে তারা গাঢাকা দিয়ে রয়েছেন। ফলে আমরা নির্বাচনে বিতর্কিত অবস্থার মধ্যে পরেছি।
সভার সভাপতি ঢাকা-১৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী খন্দকার এমদাদুল হক সেলিম বলেন, আমাদের সভাপতি-মহাসচিব কোনো যোগাযোগ রাখেন না। আমরা কিভাবে আছি, না আছি, মাঠে নির্বাচনের অবস্থা কি তার কোনো খোঁজ রাখছেন না। আমাদের সভাপতি-মহাসচিব বিএনপি থেকে বহিষ্কার হয়েছেন। এখন তারা আমাদের তৃণমূল বিএনপির সভাপতি-মহাসচিব। উনাদের উদ্দেশ্য আমরা এখন যেটা বুঝতে পারছি, অন্যান্য দলের সঙ্গে উনার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তা বজায় রেখেছেন। উনারা অন্তরে এক কথা বলেন মুখে আরেক কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আমাদের বর্তমানে যে অবস্থা সেই অবস্থায় আমাদের বর্তমান সভাপতি ও মহাসচিবকে বহিষ্কার করে নতুন সভাপতি ও মহাসচিব যদি আনা যায় তাহলে জনগণ খুশি হবে। আমাদের দলের এই মুহূর্তে প্রার্থী আছে ১৩৭ জন। আমি মনে করি দুজনকে বাদ দিয়ে ১৩৫ জনই আমাদের সঙ্গে আছে।
আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন বরগুনা-২ আসনের ইউনূস সোহাগ, কুমিল্লা-২ আসনের মো. মাঈনুদ্দিন, নেত্রকোনা-৪ আসনের আল মামুন, নেত্রকোনা-৫ আসনের আব্দুল ওয়াহাব হামিদী, ঢাকা-৬ আসনের কাজি সিরজুল ইসলাম, মাগুরা-১ আসনের সঞ্জয় রায় রনি, মাদারীপুর-৩ আসনের প্রবীণ হালদার প্রমুখ।