দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যু এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রসঙ্গ নিয়ে আবারও কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার বাংলাদেশি এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার এ প্রসঙ্গে কথা বলেন।

 

ইন্দো-প্যাসেফিক স্ট্র্যাটেজির দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ ব্রিফিংয়ে ওই সাংবাদিক বলেন, বাংলাদেশ এবং ইন্দো প্যাসিফিক সম্পর্কে আমি কয়েকটি প্রশ্ন করতে চাই আপনাকে। আমেরিকা কীভাবে একটি কর্তৃত্ববাদী শাসনের উত্থানকে বিবেচনা করে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলটি নিয়ে কীভাবে কাজ করার পরিকল্পনা করছে? কয়েক বছর ধরে আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে কঠোর সমালোচনা শুনেছি। বাংলাদেশের নতুন কর্তৃত্ববাদী সরকারের সঙ্গে এটি নিয়ে আপনাদের ভূমিকা কী হবে?

জবাবে আফরিন আক্তার বলেন, আমি জানি এটা আপনার জন্য একটি ভালো প্রশ্ন। তাই আমি মনে করি, আপনি জানেন, আমরা বিষয়টিতে ফোকাস করছি। আমরা অবিশ্বাস্যভাবে বাংলাদেশে সুশীল সমাজকে যুক্ত করার দিকে মনোনিবেশ করছি। আবার ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের প্রথম স্তম্ভ হল একটি মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল। তাই আমি সাউথ এশিয়া গভর্নেন্স ফান্ডের কথা বললাম। আমরা বাংলাদেশের কৃষকদের সঙ্গে কাজ করছি; যারা সরকারি সেবা পেতে সংগ্রাম করছেন। আমরা শ্রমিক সংগঠকদের সঙ্গে কাজ করছি। আমরা সুশীল সমাজের সব স্টেকহোল্ডাদের সঙ্গে কাজ করছি।

মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি করার ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য হল বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে নাগরিকদের অধিকার সংরক্ষণ করা, দীর্ঘমেয়াদে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। আমরা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বাংলাদেশের নিবিড়ভাবে জড়িত।

তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখে সত্যিই সন্তুষ্ট হয়েছি, যা সত্যিই অর্থনৈতিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করা, আমাদের দুদেশের মধ্যে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমরা যা করার চেষ্টা করছি তার অনেক কিছুই প্রতিফলিত করে। বাংলাদেশ অবশ্যই শান্তিরক্ষায় (পিস মিশন) আমাদের অন্যতম বৃহত্তম অবদানকারী। এবং আমরা সেই প্রচেষ্টাকে সমর্থন করতে পেরে খুবই আনন্দিত।

মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের বিষয়গুলোকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অব্যাহত রাখব। সেক্ষেত্রে আমাদের ফোকাস আসলেই সুশীল সমাজ।

বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার বাস্তবায়নে মানুষের কাছে থাকার অঙ্গীকার করেছিল। ওই সাংবাদিক জানতে চান, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্র কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছে কিনা? তিনি বলেন, আমরা কিছু সমালোচনা দেখেছি এবং আমি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের অংশটি উল্লেখ করতে পারি যে, তারা লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিকাশের ক্ষেত্রে পিছু হটেছে। তাহলে এখন আপনার অবস্থান কি? গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার এবং মানবাধিকার সমুন্নত রাখার জন্য আমরা বাংলাদেশে অনেক লিভারেজ লক্ষ্য করেছি।

জবাবে মার্কিন উপ সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সত্যিই গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পরিবেশ তৈরি করার দিকে মনোনিবেশ করতে চাই। তাই মিডিয়া নিয়ে কাজ করছি। আমাদের হাতে প্রচুর কাজ চলছে- বাংলাদেশে উন্নয়নশীল মুক্ত মিডিয়া, সুশীল সমাজের সঙ্গে কাজ করা, শ্রম সংগঠকদের সাথে কাজ করা। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলার জন্য যা বাংলাদেশকে আরও বেশি গণতান্ত্রিক হতে সাহায্য করবে।