পার্লামেন্টে বিরোধী দলের আসনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিটিআই
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: পাকিস্তানের পার্লামেন্ট নির্বাচনে একক দল হিসেবে সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই)। তবে সরকার গঠন না করে পার্লামেন্টে বিরোধী দলের আসনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
শুক্রবার দলটির কেন্দ্রীয় নেতা ও মুখপাত্র ব্যারিস্টার মুহম্মদ আলী খান আসিফ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন বলে খবর দিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম।
জিও নিউজ জানিয়েছে, এদিন রাজধানী ইসলামাবাদে আরেক রাজনৈতিক দল কওমি ওয়াতান পার্টির সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্যারিস্টার আসিফ এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তিনি বলেন, রাজনীতিবিদরা ক্ষমতালোভী— এমন অভিযোগ অনেকেই করেন। এবারের নির্বাচনে আমরা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি (কেন্দ্রীয় পার্লামেন্ট) ও পাঞ্জাব আইনসভায় যত আসন পেয়েছি, তাতে চাইলে আমরা কেন্দ্রে সরকার গঠন করতে পারতাম। কিন্তু আমরা তা করছি না। তার পরিবর্তে পার্লামেন্টে আমরা বিরোধী দলে থাকব। এটা দলীয় সিদ্ধান্ত।
তিনি জানান, পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে জোট গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশ মেনেই শুক্রবার কওমি ওয়াতান পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেছে পিটিআই।
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় পার্লামেন্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির মোট আসন ২৬৬টি। এসব আসনের একটি ব্যতীত বাকি ২৬৫টি আসনে নির্বাচন হয়েছে গত ৮ ফেব্রুয়ারি। এটি ছিল পাকিস্তানের ১৬তম পার্লামেন্ট নির্বাচন।
সাংবিধানিক বিধি অনুযায়ী, পাকিস্তানে কোনো দল বা জোট যদি সরকার গঠন করতে চায়— তাহলে সেই দল বা জোটকে অবশ্যই ১৩৩টি আসনে জয়ী হতে হবে। তবে ৮ তারিখের নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, পিটিআই, পাকিস্তান মুসলিম লীগ-এন (পিএমএল-এন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)— দেশটির প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে পিটিআই। মোট ৯২টি আসনে জয়ী হয়েছেন পিটিআই প্রার্থীরা।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা পিএমএল-এন জয়ী হয়েছে মোট ৭৯টি আসনে এবং ৫৪টি আসন পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পিপিপি। অর্থাৎ সরকার গঠনের জন্য ন্যুনতম যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন, তা পায়নি কোনো দলই।
ফলে অভূতপূর্ব এক অনিশ্চয়তা দেখা দেয় পাকিস্তানের রাজনীতিতে। এই সংকট কাটানোর সবচেয়ে উপযুক্ত সমাধান ছিল যে কোনো দু’টি রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে জোট সরকার গঠন করা, কিন্তু কোন দুই দল জোট গঠন করবে— তা নিয়ে গত ৯ দিন ধরে পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ব্যাপক নাটকীয়তা পরিলক্ষিত হয়েছে। এমনকি উদ্ভূত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে নেবে— এমন গুঞ্জনও শুরু হয়েছিল।
পিটিআইয়ের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সেই অনিশ্চয়তার সংকট কেটে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।