দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: চলতি অর্থবছরই উত্তীর্ণ হচ্ছে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলোর কর সুবিধা। তবে, কোম্পানিগুলোর সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ডের (এএএমসিএমএফ) দাবির মুখে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফের একই সুবিধা দিতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

 

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, এসব প্রতিষ্ঠান এক যুগ ধরেই মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থাপনা ফি বাবদ অর্জিত আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর দিচ্ছে। চলতি অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানগুলোর ওই সুবিধা উত্তীর্ণ হবে। তাই আগে থেকেই ২০২৫-২০২৬ করবর্ষ পর্যন্ত ১৫ শতাংশ কর সুবিধা নির্ধারণ করতে এনবিআরের আয়কর বিভাগকে অনুরোধ করে এএএমসিএমএফ।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলো এ দেশে বিশ্বমানের উচ্চ প্রশিক্ষিত তহবিল ব্যবস্থাপক তৈরি করছে। এছাড়া বিনিয়োগ তহবিল ব্যবস্থাপক, গবেষণা বিশ্লেষক, মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞের মতো দক্ষ কর্মী নিয়োগের সক্ষমতা তৈরি করে দেশের সামগ্রিক পুঁজিবাজার উন্নয়নের জন্য বড় অবদান রাখছে। গত এক দশকে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট সেক্টরে উচ্চ-দক্ষ কর্মশক্তির ফান্ড ম্যানেজারদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ইতিবাচকভাবে অবদান রাখছে। এসব বিবেচনায় অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিসমূহের কেবল মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থাপনা ফি বাবদ অর্জিত আয়ের ওপর প্রদেয় করহার ২০২৫-২০২৬ করবর্ষ পর্যন্ত ১৫ শতাংশ নির্ধারণের করার সুপারিশ করা হয়েছে।

জানা যায়, বাংলাদেশের বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা শিল্প (মিউচুয়াল ফান্ড) প্রতিবেশী দেশ ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডের তুলনায় এখনো ছোট। বাংলাদেশের মিউচ্যুয়াল ফান্ড সেক্টরের আকার জিডিপির শূন্য দশমিক ৫ শতাংশেরও কম, যা ভারতে ১৬ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ২৫ দশমিক ২ শতাংশ, থাইল্যান্ডে ২৬ দশমিক ২ শতাংশ এবং বৈশ্বিক গড় ৮০ শতাংশের বেশি। কোভিড পরবর্তী অর্থনৈতিক মন্দা ও চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকট এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বড় আকারে শেয়ার বিক্রির কারণে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার উল্লেখযোগ্য ক্ষতির সম্মুখীন পুঁজিবাজারের দুরবস্থার কারণে বাংলাদেশের মিউচ্যুয়াল ফান্ড সেক্টর অধিকতর চাপের মধ্যে রয়েছে।

আরও জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর এসআরও এর মাধ্যমে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিসমূহের কেবল মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থাপনা ফি বাবদ অর্জিত আয়ের ওপর প্রদেয় আয়কর প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ হতে ১০ (দশ) বৎসরের জন্য ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। যার মেয়াদ ২০২৩-২০২৪ করবর্ষে উত্তীর্ণ হবে। কিন্তু এরই মধ্যে আগের মতো কর হার রাখতে সুপারিশ করেছে এএএমসিএমএফ। সংগঠনটি পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক সংকটকালীন মুহূর্তে বাজারের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির নিমিত্ত অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলোর আয়কর ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করতে অনুরোধ করেছে।

জানতে চাইলে শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ এমরান হাসান বলেন, আমরা এ সংক্রান্ত একটা প্রস্তাব দিয়েছিলাম। শুনেছিলাম ১৫ শতাংশ থাকবে না, তাই আবেদন করেছিলাম। এখন আমাদের ফেভারেই থাকছে। এ উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।