নির্বাচনে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে ভারত বাংলাদেশের পাশে ছিল: কাদের
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: যারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে তাদের ঘরেই ভারতীয় পণ্যের ছড়াছড়ি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শনিবার (৩০ মার্চ) রংপুর বিভাগের আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে দলের গুলিস্তানস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
নির্বাচনে ভারত বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে—এ প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘একাত্তরে ভারতসহ কিছু বন্ধু রাষ্ট্র যেমন পাশে ছিল, এবারের নির্বাচনে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে তারা বাংলাদেশের পাশে ছিল। যারা এখন ভারতীয় পণ্য বর্জন করে তাদের রান্না ঘর, ড্রয়িংরুম ও বেড রুমে ভারতীয় পণ্যের ছড়াছড়ি।
পাকিস্তান আমলের মতোই ভারত বিরোধিতা শুরু করেছে অশুভ শক্তি। ’ সব হারিয়ে এখন বিএনপি ভারত বিরোধিতায় নেমেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নির্বাচনের আগে যে ভয় ও আতঙ্ক ছিল তা কেটে গেছে বলে এ সময় মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ ও ৩২টি সংস্থা ইতোমধ্যে নির্বাচিত সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে এবং শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনের আগে যাদের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞার আতঙ্ক ছড়ানো হয়, তারাও এখন বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। ’
বিএনপি রাজনৈতিক শক্তি কমে গেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দলটির রাজনৈতিক শক্তি কমে যাওয়ায় এখন তারা মুখের ভাষায় বিষ ছড়াচ্ছে। ’
বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের নেতারা এত বিশ্রী ভাষায় কথা বলতে পারেন এটি বিশ্বাস করতেও কষ্ট হয়। ’
আর্থিক বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থান অত্যন্ত শক্তিশালী। অপপ্রচার ও মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ’
দলীয় নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কিছুই করতে পারবে না, কারণ কিছু করার ক্ষমতা বিএনপির নেই। ’
বিএনপির আশেপাশের নেতাকর্মী কারাগারে রয়েছে— মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মিথ্যার বেসাতি করে রাজনীতি করলে এ রাজনীতি টিকবে না। ’ এ সময় তিনি মির্জা ফখরুলের কাছে কারাগারে আটক নেতাদের তালিকাও চান তিনি।
শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন রাজনীতির কাছে বিএনপি রাজনীতি অন্ধকারে হারিয়ে গেছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছিলেন পয়েট অব পলিটিক্স এবং কন্যা শেখ হাসিনা হলেন ম্যাজিশিয়ান অব পলিটিক্স। ’
শেখ হাসিনার উন্নয়ন রাজনীতি বিএনপিকে যে অন্ধকারে ফেলে দিয়েছে সেই অন্ধকার থেকে সহসায় দলটির বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা নেই মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির ঘরেই তাদের শত্রু রয়েছে- যাদের আপন ঘরে শত্রু রয়েছে তাদের শত্রুতার জন্য বাইরের শত্রুর দরকার নেই। ’
মতবিনিময় সভার শুরুতে ওবায়দুল কাদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু পরিবেশে অনুষ্ঠানে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের কঠোর নির্দেশনা দেন। স্থানীয় এমপি নিজের মতো প্রার্থী মনোনীত করে দল এবং প্রশাসনকে ব্যবহার করে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে যেন বাধাগ্রস্ত না করে তার জন্য কঠোর অবস্থানের কথাও জানান তিনি।
দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় স্বচ্ছভাবে দুঃসময়ের ত্যাগী কর্মীদের দিয়ে কমিটি গঠন করতে জেলা ও উপজেলাকে নির্দেশ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোনো উপজেলা কমিটি গঠন এবং ভাঙার এখতিয়ার জেলার নেই। তারা শুধু সুপারিশ করে কেন্দ্রে পাঠাবেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র। ’
রাজনৈতিক নেতাদের কর্মকাণ্ড এবং কথা বলায় সংযমী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ড এবং বক্তব্যের দায় দল নেবে না। ’ নেতাদের কর্মকাণ্ডে যেন দলের বদনাম না হয় সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন ও সতর্ক থাকারও নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।