দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা তুলে নেওয়ার ৩৬ ঘণ্টা পরও সন্ধান মেলেনি সোনালী ব্যাংকের অপহৃত ম্যানেজারের, উদ্ধার হয়নি লুট হওয়া ১৪টি অস্ত্র। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসীদের ধরতে ও রুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান রয়েছে। 

 

এদিকে, কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সরকারি দুই ব্যাংকের তিন শাখায় সন্ত্রাসী হামলা ও লুটপাটের পর আতঙ্ক বেড়েছে স্থানীয় মানুষদের। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না তারা।

মঙ্গলবার রাত ও বুধবার দুপুরে বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। তারা নগদ অর্থ, মোবাইল ফোন ছাড়াও নিরাপত্তারক্ষীদের ১৪টি স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রও লুট করে।

পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসীরা নিজেদের অবস্থান জানান দিতেই এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

প্রথমে মঙ্গলবার রাত রাত নয়টার দিকে ৭০ থেকে ৮০ জনের একটি সশস্ত্র দল রুমাতে সোনালী ব্যাংকে হামলা চালায়।

সন্ত্রাসীরা ব্যাংকের পাহারায় থাকা পুলিশ ও আনসারদের আটটি চায়নিজ রাইফেল, দুটি এসএমজি, চারটি শটগান ও ৪১৫ট রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নেয়।

এরপর কাছের মসজিদেই প্রবেশ করে কেএনএফে সন্ত্রাসীরা। সেখান থেকে তারাবির নামাজে থাকা সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখার ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে।

এরপর বুধবার দুপুরে থানচি উপজেলায় সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের দুটি শাখায় হামলা চালিয়ে ডাকাতি করে সন্ত্রাসীরা।

সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে গুলি চালাতে চালাতে ব্যাংক দুটির শাখায় প্রবেশ করে। সেখান থেকে নগদ টাকা, ব্যাংকে কর্মরতদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় তারা। তবে থানচির মতো ছোট বাজারে গুলি ছুড়তে ছুড়তে সন্ত্রাসীদের প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই চারদিক থেকে ছুটে আসতে থাকে বিজিবি, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তবে তার আগেই লুটপাট করে সরে পড়ে সন্ত্রাসীরা।

দিনের আলোতে কুকি-চিনের ভয়াবহ এ ঘটনায় আঁতকে উঠেছে স্থানীয়রা। বান্দরবানের সাত উপজেলা জুড়েই বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক।

রুমা থানচিতে প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাচ্ছে না মানুষ। যারা বের হচ্ছেন, তাদেরকেও খুবই সতর্ক অবস্থায় চলাফেরা করতে দেখা গেছে।

নিরাপত্তা জোরদারে জেলার সাত উপজেলার ব্যাংকের শাখাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হন পুলিশের দুই সদস্যসহ তিনজন। বুধবার রুমায় যান পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ।

সন্ত্রাসীদের দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে চলমান আছে বলে জানান তিনি।