দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: আইপিএলে মহেন্দ্র সিং ধোনির যে জনপ্রিয়তা, তার সঙ্গে অন্য কারও তুলনা চলে না। চেন্নাই সুপার কিংসের জার্সিতে তাকে খেলতে দেখে এমনকি প্রতিপক্ষের সমর্থকরাও নিজেদের দলের কথা ভুলে যায়।

 

 

টিকিটের চাহিদা থাকে আকাশচুম্বী এবং তার উপস্থিতির কারণে মুহূর্তেই পুরো গ্যলারি রূপান্তরিত হয় হলুদ রঙে। গ্যালারি থেকে 'ধোনি, ধোনি' স্লোগান যেন গর্জনে পরিণত হয়।

এসব অবশ্য ধোনির জন্য নতুন কিছু নয়। তবে প্রতিবারই যেন নতুনের দেখা মেলে। গতকাল লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে ম্যাচেও এর অন্যথা হয়নি। ম্যাচের আগে ধোনির প্রতি দলটির সমর্থকরা নিজেদের মাটিতে তাদের দলকে হারানোর আহ্বান জানিয়েছিল। ভাবা যায়! অণ্য অনেক ম্যাচের মতোই গ্যালারিতেও স্বাগতিক দলের জার্সির বদলে ধোনিদের হলুদ জার্সির আধিক্য ছিল অনেক বেশি।

কাল যখন ব্যাট হাতে মাঠে নামলেন ধোনি, তার নামে স্লোগানে যেন কেঁপে উঠছিল অটল বিহারি বাজপেয়ী স্টেডিয়াম। মাঠের খেলায়ও সমর্থকদের ভালোবাসার প্রতিদান দিয়েছেন ধোনি। ৩ চার ও ২ ছক্কায় করেছেন ২৮ রান। চল্লিশ পেরোনো 'থালা' আইপিএলের ইতিহাসে প্রথম উইকেটকিপার-ব্যাটার হিসেবে ৫ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়ে যান ধোনি। যদিও ম্যাচটি ৮ উইকেটে হেরে গেছে তার দল।

হারের পাশাপাশি লক্ষ্ণৌয়ের অধিনায়ক লোকেশ রাহুলের কাছে একটি রেকর্ডও খুইয়েছেন ধোনি। আইপিএলে উইকেটকিপার-ব্যাটার হিসেবে ২৫তম পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলেছেন রাহুল। আইপিএলে এ পর্যন্ত ১২৫ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এর মধ্যে ৬৮ ম্যাচে উইকেটকিপার-ব্যাটার হিসেবে খেলেছেন রাহুল। ২৩টি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলে এই তালিকায় তৃতীয় দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্টন ডি কক। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর দিনেশ কার্তিক ২১ পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছেন।

কিন্তু রেকর্ড ভাঙার পর দল জিতিয়ে মাঠ ছাড়ার সময় ধোনিকেই টুপি খুলে শ্রদ্ধা জানালেন রাহুল। ক্রিকেটে এমন দৃশ্যের দেখা হরহামেশা মেলে না। দুই দলের খেলোয়াড়দের মাঠ ছাড়ার সময় সবার আগে চেন্নাইয়ের অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের সঙ্গে হাত মেলান রাহুল। তখন রাহুল টুপি খোলেননি। কিন্তু ধোনির সঙ্গে হাত মেলানোর আগে মাথা থেকে টুপি খুলে বাঁ হাতে নেন রাহুল। মুখভর্তি হাসি নিয়ে দুজনের মধ্যে স্বল্প সময়ের জন্য বাক্য বিনিময়ও হয়। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ওই মুহূর্তের ভিডিও বেশ সাড়া ফেলেছে।

ধোনির জন্য 'ক্রেজ' দেখা গেলেও লক্ষ্ণৌয়ে গতকাল রাহুলের দলেরই রাজত্ব ছিল। চেন্নাইয়ের দেওয়া ১৭৭ রানের লক্ষ্য ১৯ ওভারেই ছুঁয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। ৫৩ বলে ৮২ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেন রাহুল। হয়েছেন ম্যাচসেরাও। কিন্তু ম্যাচ শেষে তাকে কথা বলতে হলো ধোনিকে নিয়েই। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, 'চেন্নাইয়ের রান ১৬০-১৬৫ হলে ভালো হতো। কিন্তু ধোনির কারণে সেটা হলো না (হাসি)। উনি নামলে বোলারদের ওপর চাপ বাড়ে। সময় এবং বোলারদের ওপর তার এতটাই আধিপত্য। আমাদের দলটা তরুণ এবং এই প্রথম তারা ধোনির মতো কারও মুখোমুখি হওয়ার চাপ অনুভব করল। দর্শকরা তো (ধোনির জন্য) গগনবিদারী আওয়াজ তুললেন। '