পুঁজিবাজারের সংকট নিরসনে বিএসইসির তিন সিদ্ধান্ত
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারের চলমান সংকট মোকাবিলায় বাজার মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সোমবার (২২ এপ্রিল) বিএসইসির কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শেয়ারবাজারকে বর্তমান সংকট থেকে উত্তোরণে প্রাথমিকভাবে তিনটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো- প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ডিলার একাউন্ট থেকে মার্কেটে সাপোর্ট দেওয়া, ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানদের সাথে বৈঠক করে বিনিয়োগ সক্রিয় করা এবং মিউচুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগ বাড়ানো।
এর আগেও বিভিন্ন সময় শেয়ারবাজারের পতন ঠেকাতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে বিএসইসি। ওই বৈঠকগুলোতেও আজকের বৈঠকের মতোই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে শেয়ারবাজারে এসব সিদ্ধান্তের ইতিবাচক প্রভাব তেমন দেখা যায়নি। ফলাফল পতনের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে শেয়ারবাজার।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিএসইসির বৈঠকের খবরে আজ শেয়ারবাজারে সূচকের উত্থান হলেও এটা স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাছাড়া বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে; আগেও বিএসইসি এসব সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
জানা গেছে, আজকের বৈঠকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ব্রোকারেজ হাউসগুলোর সংগঠন ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ), মার্চেন্ট ব্যাংকারদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) এবং প্রধান ১০টি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহীগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন , পুঁজিবাজারের অংশীজন এবং ব্রোকাররা বাজারের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করছেন। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বাজার সংশ্লিষ্টদের মতামত গুরুত্ব সহকারে মূল্যায়ন করে থাকে এবং পুঁজিবাজারের বিভিন্ন বিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টদের মতামত ও পরামর্শ এর মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজারের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করাই বিএসইসির লক্ষ্য।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিরি উত্তরণে আজকের সভায় বাজার সংশ্লিষ্টদের মতামত ও পরামর্শ আমলে নিয়ে কাজ করবে বিএসইসি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও আর্থিক অবস্থান যেমন উন্নতি হচ্ছে এবং দেশের পুঁজিবাজারও দ্রুতই প্রাণবন্ত ও বলিষ্ঠ রূপে ফিরবে বলে আশা করা যায়।
সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দ্রুতই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ও পুঁজির সুরক্ষা নিশ্চিত করে দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন তরান্বিত করার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সভায় বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরে করণীয় বিষয়ে আলোকপাত করেন এবং বিএসইসির নিবন্ধনপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সমূহের (স্টক ডিলার, মার্চেন্ট ব্যাংক, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ইত্যাদি) এর বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য আহ্বান জানান। এছাড়াও ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে ব্যাংকসমূহের হেড অব ট্রেজারিদের সাথে একটি সভা অনুষ্ঠানের বিষয়ে মতামত দেন তিনি।
এসময় বর্তমান পুঁজিবাজারে বিদ্যমান নানা সমস্যা সম্পর্কে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং এসকল সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে বিএসইসি ও ব্রোকারেজ হাউজের প্রতিনিধিরা সমন্বিতভবে কাজ করার বিষয়ে একমত হন।