দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: যে মে দিবসের সূচনা যুক্তরাষ্ট্র থেকে সেই যুক্তরাষ্ট্রেই ১ মে শ্রমিক দিবস হিসেবে পালিত হয় না। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা এই দুইটি দেশ পহেলা মে-র পরিবর্তে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সোমবার শ্রম দিবস হিসেবে পালন করে।

১৮৮৬ সালের মে মাসে প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের হত্যাকাণ্ডের পর দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড মনে করেছিলেন পয়লা মে তারিখে যেকোন আয়োজন হানাহানিতে পর্যবসিত হতে পারে।সে জন্য ১৮৮৭ সালেই তিনি পহেলা মে-র পরিবর্তে সেপ্টেম্বরে শ্রম দিবস পালনের প্রতি ঝুঁকে পড়েন। একইভাবে ১৮৯৪ সালে প্রধানমন্ত্রী জন স্পারও ডেভিড থমসন সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সোমবার কানাডার সরকারি শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন।

বর্তমানে চীন, উত্তর কোরিয়া, কিউবা ও কমিউনিস্ট ভাবাপন্ন বিভিন্ন দেশে ১ মে ‘শ্রম দিবস’ হিসেবে গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয়। ভারত, বাংলাদেশসহ এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশের ৮০টিরও বেশি দেশে মে দিবস সাধারণ ছুটি ও শ্রমিক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে থাকে।

পাকিস্তান আমলে মে দিবস পালন সরকারিভাবে নিষিদ্ধ থাকলেও বামপন্থি ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও ট্রেড ইউনিয়নসহ শ্রমিক সংগঠনগুলো দিনটি পালন করত। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে সাধারণ সরকারি ছুটি পালন করা হয়।

১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো নগরীর শ্রমিকরা দৈনিক আট ঘণ্টা কর্মসময় নির্ধারণ ও ন্যায্য মজুরির দাবিতে সর্বাত্মক ধর্মঘট শুরু করে। এতে যে আন্দোলনের সূচনা হয়, তা চূড়ান্তরূপ লাভ করে ৩ ও ৪ মে। এই দুইদিনে শিকাগোতে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায় ১০ জন শ্রমিক, আহত হয় অনেকে। পুলিশ অনেক শ্রমিককে গ্রেপ্তার করেন। এই শ্রমিকদের মধ্যে চারজনকে পরে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়। কারাগারে বন্দীদশায় আত্মহনন করেন একজন শ্রমিক নেতা। শ্রমিক আন্দোলনের এই গৌরবময় অধ্যায়কে স্মরণীয় করে রাখতে ১৮৯০ সাল থেকে পালিত হয়ে আসছে মে দিবস।