মুজিব কিল্লা নির্মাণের আড়াঁলে অনিয়ম, হরিলুট ও স্বেচ্ছাচারিতা
শামীম রিজভী, দ্য রিপোর্ট: দুযোর্গ ব্যবস্থাপনার অধিদপ্তরের আওতাধীন "মুজিব কিল্লা" নির্মাণ নিয়ে অনিয়ম, হরিলুট ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এই প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী পিআইও সমিতির সভাপতি মুবিনুর রহমান, আনোয়ারুল ইসলাম ও জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ওই সকল অভিযোগ এসেছে।
এক চিঠির মাধ্যমে দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মুজিব কিল্লা প্রকল্পের বাজেট ৫ বছর আগে এক হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা করা হলেও এখন তা বেড়ে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা করা হয়েছে। অথচ গত ৫ বছরে মাত্র ২৮% কাজের অগ্রগতি হয়েছে। এই প্রকল্পটি ধীরগতিতে করার মূল কারণ হলো, যেহেতু প্রকল্পটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে তাই বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে দায়িত্বপ্রাপ্ত অভিযুক্তদের বরখাস্ত করা হবে।
অধিদপ্তর সূত্রে আরো জানা যায়, মুবিনুর রহমান, আনোয়ারুল ইসলাম ও জাকির হোসেন প্রকল্প কনসালটেন্ট বুয়েটকে অসহযোগিতা করে এক বছর সময় নষ্ট করার পর ডুয়েট এর সাথে নতুনভাবে চুক্তি করেন। টেন্ডার ধীরগতি, ঠিকাদারদের সিদ্ধান্তহীনতায় রাখা, চুড়ান্ত বিল না দিয়ে আটকে রাখা ইত্যাদি কারণে ঠিকাদাররা নিরুৎসাহিত হয়ে কাজ বন্ধ রেখেছে। অথচ প্রকল্পের ৫০টি নির্মাণ সাইট হস্তান্তরযোগ্য। তারা তাদের পছন্দমত ঠিকাদারদেরই এই প্রকল্পের জন্য বাছাই করেছেন, বিশেষ করে রামগতি, সুবর্ণচর, বরিশাল সদরে এমন লক্ষ্য করা গিয়েছে। পছন্দমত ঠিকাদার না হলে রডের পরিমাণ কমিয়ে চূড়ান্ত বিল পাশ করতেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা দ্য রিপোর্টকে জানান, বর্তমানে প্রায় ৫০টি গ্রুপের ৩০০ কোটি টাকার টেন্ডার চলমান রয়েছে। এই টেন্ডারের ৩ মাস চলে গেলেও অভিযুক্তরা ফাইল আটকে রেখেছে, ফলে প্রজেক্ট ডিরেক্টর ওয়ার্ক অর্ডার দিতে পারছেন না। এতে করে ঠিকাদাররা অধিদপ্তরে হতাশা প্রকাশ করেছেন। অধিদপ্তর সূত্র আরো অভিযোগ করে, অভিযুক্তরা দুর্নীতি সহজ করার জন্য ক্ষমতা প্রয়োগ করে মোটা টাকার বিনিময়ে সৎ ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে বদলী করে একজন দূর্নীতিবাজ ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে নিয়োগ দিয়েছেন। চলতি বছরের গত ৮ ফেব্রুয়ারি ওই ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর ও অভিযুক্তদের সাথে প্রজেক্ট ডিরেক্টরের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রজেক্ট ডিরেক্টর জানে আলম এ প্রকল্পে না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রজেক্ট ডিরেক্টর জানে আলম দ্য রিপোর্টের কাছে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অভিযোগপত্র সম্পর্কে জানতে চাইলে অডিট কমপ্লেক্সের প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তা (অডিটর) রাজিব হোসেন দ্য রিপোর্টের এই প্রতিবেদককে বলেন, এ ব্যাপারে তো আমি কিছুই জানি না। তাই মন্তব্য করতে পারছি না। আমার নলেজে এমন কোন অভিযোগ আসে নাই। আমি জানলে হয়তো আপনাকে কিছু বলতে পারতাম। অভিযোগপত্রের অন্যতম অভিযুক্ত প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী পিআইও সমিতির সভাপতি মুবিনুর রহমানের মন্তব্যের জন্য তাকে কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার কাছ থেকে কোন সাঁড়া পাওয়া যায় নাই।
(দ্য রিপোর্ট/এসআর/মার্চ ০৮, ২০২৪)