সীমান্তে হত্যা: ভারতের কাছে বাংলাদেশের উদ্বেগ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন এর সঙ্গে বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা। সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা নিয়ে ভারতের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ। সীমান্ত হত্যা বন্ধে ‘প্রাণঘাতী’ নয় এমন অস্ত্র ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রার সঙ্গে বৈঠক সীমান্ত হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।
তিনি বলেন, গত কয়েক সপ্তাহে সীমান্তে বেশ কিছু বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন।
সেটি নিয়ে বাংলাদেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ব্রিকসে সদস্য পদ অর্জন নিয়ে সকল সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গেই বাংলাদেশ যোগাযোগ করছে। ভারতের সঙ্গেও যোগাযোগ হয়েছে। তারা সবার সঙ্গে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া সম্পর্কের অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, তিস্তা ইস্যুর সমাধান, গঙ্গা চুক্তি নবায়ন। সকল ধরনের কানেক্টিভিটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
কবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফর করবেন জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, সফরটি শিগগিরিই হবে। ভারতে নির্বাচন এখনও চলছে। নির্বাচনের পর সরকার গঠন হলে দিল্লি যাবেন প্রধানমন্ত্রী।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, রোহিঙ্গ সমস্যা সমাধানেও ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বর্তমানে রাখাইন স্টেটে যে সমস্যা হচ্ছে তা নিয়ে কথা বলেছি। বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) প্রবেশের বিষয়ে আলাপ করেছি। তাদের সীমান্তেও একই সমস্যা। এসব নিয়ে ভবিষ্যতে আরও কি পদক্ষেপ নেয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিস্তা প্রকল্প চীন ও ভারত কি যৌথভাবে বিনিয়োগ করবে- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, তিস্তার প্রকল্প নিয়ে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে আলোচনা হয়নি। তবে ভারতের আগ্রহ রয়েছে, বিস্তারিত এখনও পাওয়া যায়নি। বিষয়টি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
ভারত থেকে নিত্যপণ্য আমদানি নিয়ে তিনি বলেন, ভারত থেকে নিত্যপণ্য আমদানি নিয়ে একটি সমঝোতা সই হওয়ার কথা। কিন্তু তা ভারতের নির্বাচনের কারণে আটকে রয়েছে। ভারতের নতুন সরকার গঠন হলে এটি দ্রুত সই নিয়ে বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। এতে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে ভারত।
ভারতীয় ভিসার বিষয়ে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ভিসা ইস্যুটা আগে থেকে অনেক সহজ হয়ে এসেছে। এরপরও কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। বিশেষ করে যারা চিকিৎসার জন্য যান, তারা সময় মতো ভিসা পাচ্ছেন না এমন অভিযোগ আসে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন হাইকমিশনে আরও লোকবল বৃদ্ধি করা হবে। ভারত থেকে আরও লোক পাঠাবে। দু-এক মাসের মধ্যে আরও দ্রুত ভিসা পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।
দুদিনের সফরে বুধবার (৮ মে) রাতে ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা। বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এটি দিল্লির কোনো প্রতিনিধির প্রথম ঢাকা সফর।