যে কারনে এমপি আনারকে বাইরে নিয়ে হত্যা
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল আক্তারুজ্জামান শাহীনের। ব্যবসায়িক লেনদেনসহ কিছু বিষয় নিয়ে আজিমের ওপর শাহীনের ক্ষোভ ছিল। তবে, তা জানতেন না এমপি আনার। এছাড়া, আমানউল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে এমপি আনারের রাজনৈতিক মতাদর্শগত দ্বন্দ্ব ছিল। তাই, শাহীন এবং আমানউল্লাহ পরিকল্পিতভাবে এমপি আনারকে দেশের বাইরে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন, যেন কেউ বুঝতে না পারে।
এমপি আনারকে খুনের উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলায় শুক্রবার (২৪ মে) তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান তিন আসামিকে আদালতে হাজির ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। রিমান্ড শুনানিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আমানউল্লাহ ওরফের শিমুল ভূঁইয়া, শিলাস্তি রহমান ও ফয়সাল আলীকে সঙ্গে নিয়ে গত ৩০ এপ্রিল ভারতের কলকাতায় নিউ টাউন এলাকায় যান আক্তারুজ্জামান শাহীন। সেখানে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন এবং অজ্ঞাত কয়েকজনকে নিয়ে এমপি আনারকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকেন। শাহীন সেখানে থাকা অবস্থায় পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে এমপি আনারকে ব্যবসায়িক মিটিংয়ের জন্য কলকাতায় যেতে বলেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শাহীন গত ১০ মে বাংলাদেশে চলে আসেন, তা এমপি আনার জানতেন না। বাংলাদেশে আসার সময় শাহীন আমানউল্লাহকে দায়িত্ব দেন, এমপি আনারকে হত্যা কোনোভাবেই যেন মিস না হয় এবং কোনো প্রমাণ না থাকে। গত ১২ মে এমপি আনার কলকাতায় যান এবং তার এক বন্ধুর বাসায় ওঠেন। পরদিন ১৩ মে সকালের দিকে তিনি ব্যবসায়িক মিটিংয়ের জন্য কলকাতার নিউ টাউন এলাকায় শাহীনের ভাড়াকৃত বাসায় যান। সেখানে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক আমানউল্লাহ, তানভীর, শিলাস্তিসহ অজ্ঞাত অন্যান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় এমপি আনারকে হত্যা করা হয়। এর পর মাংস ও হাড় আলাদা করে গুম করা হয় যেন কোনো প্রমাণ না থাকে এবং আসামিরা পরে বাংলাদেশে চলে আসেন।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথি শুনানি শেষে তিন আসামির ৮ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন—আমানউল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া (৫৬), তানভীর ভূঁইয়া (৩০) ও শিলাস্তি রহমান (২২)।