দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: এবারই প্রথম বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে আফ্রিকান দেশ উগান্ডা। জিম্বাবুয়েকে টপকে একেবারে সারপ্রাইজিং প্যাকেজ হয়ে আটলান্টিক পাড়ে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে এসেছে দেশটি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে লজ্জাজনক হারের রেকর্ডও গড়েছে তারা। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচেই বুঝিয়ে দিল, কেবল খেলার উদ্দেশে না, কিছু একটা করে দেখাতেই তাদের বিশ্বমঞ্চে আগমন। 

 

প্রতিপক্ষ পাপুয়া নিউগিনিও শক্ত কেউ না। তবে বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতায় উগান্ডার চেয়ে ঢের এগিয়ে। আসাদ ভালার দল এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও চ্যালেঞ্জ করেছিল। যে কারণে উগান্ডার বিপক্ষে তারাই ছিল ফেবারিট। কিন্তু ৭৭ রানে পাপুয়া নিউগিনিকে অলআউট করে নিজেদের জয়ের কাজটা সহজ করে রেখেছিল আফ্রিকান দেশটি। এরপর রানতাড়ায় বেশ চাপের মুখে থাকলেও শেষপর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের দেখা পায় উগান্ডা।

ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত উইকেট হারালেও উগান্ডা ধরে রেখেছিল স্নায়ুচাপ। সময় নিয়েছে। ধীরগতিতে খেলেছে। তবে জয়ের লক্ষ্যে তারা ছিল অবিচল। আগের ম্যাচেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবচেয়ে ধীরগতির ইনিংস খেলার রেকর্ড গড়েছিলেন উগান্ডার রিয়াজাত আলী শাহ। আজ খেললেন তেমন আরেক ইনিংস। তবে আজকের ম্যাচটা উগান্ডাকে এনে দিয়েছে তাদের বিশ্বকাপে প্রথম জয়! প্রথম ৬ রানের মাথায় তিন উইকেটের পতন। রজার মুসাকা, সিমন সেসাজাই এবং রবিনসন ওবুইয়া, তিনজনেই করেছেন হতাশ। রিয়াজাতকে সঙ্গ দিতে পারেননি আলপেশ রামজানি এবং দীনেশ নাকরানি।৭৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ২৬ রানে ৫ উইকেট হারায় উগান্ডা। এরপর জুমা মিয়াজিকে নিয়ে রিয়াজাতের ৩৫ রানের জুটি উগান্ডার স্কোর টেনে নেয় ৬১ পর্যন্ত।

বাকি কাজটায় রিয়াজাতের সঙ্গী কিনিথ ওয়াইসইয়া। অবশ্য ৭৫ রানের সময় রিয়াজাত আউট হলে আবার শঙ্কায় পড়ে যায় উগান্ডার জয়ের স্বপ্ন। ৭৫ রানে ৭ম উইকেটের পতন। কিন্তু ওয়াইসয়া বিপদ বাড়তে দেননি। ১৯তম ওভারে দলের জয় নিশ্চিত করেন। ডাগআউট আর গ্যালারিতে জমা হওয়া গুটিকয়েক উগান্ডান সমর্থকদের উল্লাসের মাত্রাই বুঝিয়ে দিয়েছিল, এমন জয় উগান্ডার ক্রিকেটের জন্য কতটা গুরুত্বের ছিল। এর আগে ৪৩ বছর বয়েসী ফ্র্যাংক এনসুবুগার বোলিং তোপে পড়েছিল পাপুয়া নিউগিনি। ৪ ওভারে মাত্র ৪ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন তিনি। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন আল্পেশ রামজানি, জুমা মিয়াজি আর কসমস কুয়েটা। তাদের সম্মিলিত বোলিং আক্রমণের মুখে দাঁড়াতেই পারেনি পাপুয়া নিউগিনি। কেবল তিন ব্যাটার যেতে পেরেছেন দুই অঙ্কের রানের ঘরে। অবশ্য তাদের ওই ৭৭ রানই উগান্ডার জন্য একটা সময় ছিল পর্বতের মতো কঠিন। দুদিন আগেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে ৭৭ রানে শ্রীলঙ্কাকে অলআউট করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই ম্যাচের পর প্রোটিয়া পেসার আনরিখ নরকিয়া মন্তব্য করেছিলেন, বিনোদনদায়ক টি-টোয়েন্টি ম্যাচের জন্য ২০টা ছক্কার প্রয়োজন হয় না। সেই কথারই যেন যথার্থ মূল্যায়ন করল উগান্ডা এবং পাপুয়া নিউগিনি। বিশ্বকাপে দেখা গেল আরও একটা লো-স্কোরিং ম্যাচ। যেখানে ক্রিকেটের উত্তেজনা ঠিকই টের পেয়েছেন দর্শকরা। আর তাতে শেষ হাসি হাসল নাবগত উগান্ডা।