দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সবসময় ছিল। উপমহাদেশে মুসলমানদের শাসনের সময়েও হিন্দুরা ভালো ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই।

তিনি বলেন, আমার দাদা হিন্দুদের জন্য মাদ্রাসা ছেড়ে দিয়েছিলেন। আমাদের এলাকার হিন্দুরা আমাদের খুব ভালো জানে। আমরা চাই হিন্দুদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। ধর্ম-বর্ণ বাদ দিয়ে সবাই হাতে হাত রেখে শপথ গ্রহণ করে বলব আমরা সবাই এক ও অভিন্ন। কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা দিবসে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা উসকানিমূলক।

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় হিন্দু মহাজোট নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা কথা বলেন ইসলামী আন্দোলনের এ নেতা।

সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, সবার সঙ্গে সাম্য ও মানবিক মর্যাদা থাকতে হবে। ৫ আগস্ট আমি বঙ্গভবনের মিটিংয়ে আপনাদের (হিন্দু) নিরাপত্তার কথা বলেছি। আপনাদের নিরাপত্তায় আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের পরিচালনায় এতে আলোচনা করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট নির্মলেন্দ রায়, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রমানিক ও জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোট সভাপতি সজিব কুন্ডু তপু।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, চরমোনাই দরবারের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ এছহাক (রহ.) মুক্তিযুদ্ধের সময় হিন্দুদের আশ্রয় দিয়ে কাছে টেনে নিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট নির্মলেন্দ রায় বলেন, ইসলামে বলা হয়েছে অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে সমান অপরাধ। অমুসলিমদের নিরাপত্তা দেওয়া মুসলমানদের দায়িত্ব। আমরা হঠাৎ এ দেশে আসিনি, এ দেশের সন্তান আমরা। আপনারা যেভাবে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা কৃতজ্ঞতা সঙ্গে স্মরণ করছি।

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রমানিক বলেন, স্বৈরাচারী সরকার দেশকে বাবার সম্পত্তি মনে করেছিল। সর্বশেষ দুটি নির্বাচনে সাধারণ মানুষ কোনো ভোট দেয়নি। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর আপনাদের গতিশীল নেতৃত্বের কারণে মন্দিরে কোনো সমস্যা হয়নি। সব মন্দিরের কমিটি আওয়ামী লীগের লোক দিয়ে করেছে। যার কারণে আওয়ামী লীগের গঠন করা মন্দির কমিটির লোকজন পালিয়েছে। বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন দেখানোর জন্য কিছু ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্বে মন্দিরে হামলা জ্বালাও-পোড়াও হয়েছে। ৫ আগস্টের পরেও ম্যাসাকার করার জন্য আওয়ামী লীগ অপচেষ্টা চালিয়েছে।

জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোট সভাপতি সজিব কুন্ডু তপু বলেন, মন্দির পাহারায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ছাত্র ও যুব নেতারা যে ভূমিকা রেখেছেন তার জন্য আপনাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এবারের পরিবর্তনের ফলে সাধারণ হিন্দুরা মনে করে এবার বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ হবে। আমরা আগামী দিনগুলোতে আপনাদের সহযোগিতা চাই।

মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকে বিশ্বজিৎ হত্যা ও নাসির নগরে হিন্দুদের ওপর জুলুম-নির্যাতনের বিষয়ে ভারত, মোদি সরকার এবং তাদের মিডিয়া টু শব্দ করেনি।