মো. কামরুজ্জামান, বাগেরহাট সংবাদদাতা : ‘সুন্দরবনের ক্ষতি হবে এমন কোন কাজ আওয়ামী লীগ সরকার করবে না’ বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে মংলা বন্দরসহ দক্ষিণাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন হবে। বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে এ অঞ্চল আলোকিত হবে। গড়ে উঠবে ভারি শিল্প-কারখানা। চাকরি পাবেন এ অঞ্চলের বেকার জনগণ।

প্রধানমন্ত্রী বুধবার দুপুরে রামপাল শ্রীফলতলা মাধ্যামিক বিদ্যালয় মাঠে জনসভায় এই প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি এ সময় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিপক্ষে আন্দোলনকারীদের সমালোচনা করে বলেন, ‘যারা দুর্নীতি করতে পারেন না তারাই ঢাকায় বসে এর সমালোচনা করেন।’

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তবে বিগত বিএনপি-জামায়াত সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বলেন, ‘তারা ক্ষমতায় আসলে শুধু লুটপাট আর মানুষ খুনের রাজনীতি করে। আর আওয়মী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নয়ন হয়। দেশের মানুষ শান্তিতে থাকে।’

আগামীতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে রামপাল ডিগ্রি কলেজসহ প্রতিটি উপজেলায় একটি কলেজ ও একটি স্কুল সরকারিকরণ করা হবে। ভেড়ামারা থেকে মংলা পর‌্যন্ত গ্যাস সরবরাহ করারও ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। মংলায় সাইলো কমপ্লেক্স (সর্বাধুনিক খাদ্যগুদাম) নির্মাণ শেষ হলে দুর্যোগপূর্ণ এ এলাকায় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।’

এর আগে, শ্রীফলতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পৌঁছে সুন্দরবন ডিগ্রি মহিলা কলেজের ২০০ শয্যাবিশিষ্ট শেখ হাসিনা ছাত্রী নিবাস, রামপালের ডাকরায় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধ, খুলনা ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। এছাড়া রামপাল ডিগ্রি কলেজের ‘বঙ্গবন্ধু একাডেমিক ভবন’, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনসহ নয়টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে উপজেলা জুড়ে গ্রহণ করা হয়েছে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সভাস্থল ও এর চারপাশে গড়ে তোলা হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়। সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

সকাল থেকে মিছিল নিয়ে সভাস্থল শ্রীফলতলা মাধ্যামিক বিদ্যালয় মাঠে আসতে শুরু করেন মংলা ও রামপাল (বাগেরহাট-৩ আসন) উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকার নেতা-কর্মীরা।

এর আগে, মংলা পৌঁছে জয়মনিরঘোলে নির্মাণাধীন ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন সাইলো (খাদ্য গুদাম) নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

তার সঙ্গে আছেন- প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহম্মেদ, আমির হোসেন আমু, খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।

জনসভায় ১৫ মিনিটের বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে রামপাল থেকে বাগেরহাটের উদ্দেশে যাত্রা করেন।

প্রধানমন্ত্রী সভাস্থলে পৌঁছানোর পর পরই বন্ধ করে দেওয়া হয় সেখানকার সকল মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক।

(দিরিপোর্ট২৪/এমকে/এমএআর/নভেম্বর ১৩, ২০১৩)