স্বাধীন হয়েছি, কিন্তু নাগিনেরা চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে: মির্জা ফখরুল
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: স্বৈরাচার সরকারের হায়েনারা এখনো লুকিয়ে আছে, যেকোন সময় আবার আক্রমণ করবে এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আক্রমণ প্রতিহত করে আমাদের গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আসুন আমরা পেছনের দিকে ফিরে না যাই, গণতন্ত্রের জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যাই।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শহীদ মিনারে গণআন্দোলনে শহীদ বীরদের স্মরণে এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য বিএনপি মহসচিব এসব কথা বলেন।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন কারানির্যাতিত সাংবাদিক শহীদুল আলম, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। স্মরণসভায় আন্দোলনে শহীদ এবং গুম-খুনের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের আর্তনাদে চারপাশ ভারী হয়ে ওঠে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের জন্য এ দেশের মানুষ সবসময় আত্মত্যাগ করেছে, প্রাণ দিয়েছে। ‘৭১-এ যখন আমরা স্বাধীন হলাম, তখন ভেবেছিলাম সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রিক রাষ্ট্র পাব। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, যারা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের দাবিদার ছিলেন, সেই আওয়ামী লীগের হাতেই গণতন্ত্র ধ্বংস হয়। ’৭৫ সালে তারা একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে। এ কথা ভুললে চলবে না, বারবার বলতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আবার ২০০৮ সালে নির্বাচনের পর রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। ছাত্রদের আন্দোলনকে বারবার দমন করতে নির্যাতন, গুম-খুনের আশ্রয় নিয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে জুলাই মাসে ও বিগত ১৭ বছর এদেশের গণতান্ত্রিক মানুষ প্রাণ দিয়েছে।
আন্দোলনে যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন তাদের অভিবাদন ও স্যালুট জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্যালুট জানান বেগম খালেদা জিয়াকে, গণতন্ত্রের প্রশ্নে তিনি কখনো আপস করেননি। দীর্ঘ ৬ বছর কারাগারে ছিলেন, ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তিনি মুক্ত হয়েছেন।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আজকে আমরা স্বাধীন হয়েছি, হয়তোবা স্বাধীন হয়েছি, কিন্তু চারদিকে নাগিনেরা তাদের চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বিভক্ত করার চেষ্টা করছে। গত ১৬ বছরের ঐক্যকে অটুট রাখতে হবে।
নেতাকর্মীদের কোনোভাবেই ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্তে পা না দেওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, অভ্যুত্থান ও আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে গঠিত সরকারের কাছেই দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা আকাশচুম্বি। তাদের কাছে আশা, তারা একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের মাধ্যমে নির্বাচন দিলে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে পারি।
স্মরণ সভায় আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, আওয়ামী লীগ দাঁড়ানোর জন্য একটা মুরগির খোপ পায়নি। আগামী ১০০ বছরও ছাত্র-জনতার কাছে তারা আস্থা পাবে না। ছাত্র-জনতার হত্যাসহ গত ১৫ বছরের গুম-খুন ও নির্যাতনের বিচার হলে আওয়ামী লীগ ‘কবর লীগে’ পরিণত হবে।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল আলম নিরব, সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন প্রমুখ।