দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:   দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজ মশিউর সিকিউরিটিজ (ট্রেক নং-১৩৪) বিনিয়োগকারীদের প্রায় ১৬১ কোটি টাকা আত্মসাত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে গ্রাহকের সমন্বিত হিসাবে (সিসিএ) ৬৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা এবং শেয়ার বিক্রি করে ৯২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা লোপাট করা হয়েছে। দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে একক কোনো ব্রোকারেজ হাউজের এটিই সবচেয়ে বড় জালিয়াতি।

আর এসব বিষয় দেখভালের ব্যর্থতার জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (সিআরও) খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদকে তলব করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

আগামী সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ডিএসইর সিআরওকে বিএসইসিতে তলব করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর এ সংক্রান্ত চিঠি ইস্যু করে বিএসইসি।

জানা গেছে, সিআরও’র দায়িত্ব হওয়া সত্ত্বেও মশিউর সিকিউরিটিজ সরেজমিনে অনুসন্ধান না করায় বিনিয়োগকারীদের হারাতে হয়েছে ১৬১ কোটি টাকা। আর এই ব্যর্থতার দায়ে ডিএসইর সিআরও খায়রুল বাশারকে শোকজ করেছে খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন। মশিউর সিকিউরিটিজের মতো পিএফআই সিকিউরিটিজ ও সিনহা সিকিউরিটিজে একই ধরনের জালিয়াতি হয়েছে। ওইসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে বিএসইসি। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা যা হারানোর, তা হারিয়ে ফেলেছে আগেই।

বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৪ মে ডিএসইকে মশিউর সিকিউরিটিজ পরিদর্শনের জন্য বিএসইসি নির্দেশ দেয়, যা শেষ করে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলে। কিন্তু এ কাজের জন্য দায়িত্বরত খায়রুল বাশার যথাসময়ে পরিদর্শন ও প্রতিবেদন জমা দিতে ব্যর্থ হয়। এক্ষেত্রে খায়রুল বাশার কমিশনের নির্দেশনা এবং ডিএসই রেগুলেশনস, ২০১৩ এর রেগুলেশনস ১৬(১০)(বি) ও ১৬(৩)(এ) পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে খায়রুল বাশারের কাছে মশিউর সিকিউরিটিজে ব্যর্থতার বিষয়ে তার কাছে ব্যাখ্যা শুনতে চায় কমিশন। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য সোমবার বেলা ১১টায় আগারগাঁওয়ে বিএসইসি কার্যালয়ে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেওয়া হলো।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ব্যর্থতার জন্য খায়রুল বাশারের বিরুদ্ধে কেনো ব্যবস্থা নেওয়া উচিত হবে না, এর কারণ জানিয়ে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছে কমিশন।

প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যে মশিউর সিকিউরিটিজের ব্যাপারে বেশকিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে বর্তমান কমিশন। এর মধ্যে আছে মশিউর সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন, ‘ফ্রি লিমিট’সহ দেওয়া সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করা, পরিচালকদের ব্যাংক ও বিও হিসাব স্থগিত এবং জড়িত ও তাদের পরিবারের সদস্যদের দেশ থেকে পালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের উদ্যোগ। তদন্তের পর আইন অনুসারে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।