"আন্দোলনের সময় বিদেশে কারাভোগকারীদের পুনর্বাসন করা হবে"
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: দেশে ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে বিদেশে মিছিল করতে গিয়ে যে ৮৭ প্রবাসী কারাভোগ করে দেশে ফিরেছেন তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, তাদের যদি অন্য কোনো দেশে পাঠাতে হয় সে ব্যবস্থাও করা হবে।
প্রয়োজনে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে কাজের ব্যবস্থা করা হবে। আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য দায়বদ্ধতা থেকে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইস্কাটনের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে গণমাধ্যমে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যেসব প্রবাসীরা জীবন এবং জীবিকার ঝুঁকিনিয়ে বিদেশে জেল খেটেছেন তাদের এই সেক্রিফাইস আমরা সবাই মনে রেখেছি। তাই আজকে তাদের বিষয়ে আমরা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ৫৭ জন যারা ফেরত এসেছেন তাদের বাইরে আমরা মোট ৮৭ জনকে এনলিস্ট (তালিকাভুক্ত)করেছি। এই ৮৭ জনকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রবাসী কল্যাণে যেসব স্কিম আছে তার অধীনে সাহায্যের পাশাপাশি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, কল্যাণ বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চাকরি কিংবা ব্যবসা করাসহ অন্য যেকোনো দেশে, যেখানে তারা যেতে পারবেন সে ব্যবস্থা করা হবে। মোট কথা তাদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
এত দিন প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে যারা লোন নিতেন তারা এখন থেকে এই ব্যাংকে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে আগে শুধুমাত্র ঋণ পরিশোধের জন্য প্রবাসীরা টাকা পাঠাতে পারতেন। এখন থেকে প্রবাসীরা এই ব্যাংকে ঋণ পরিশোধের মাধ্যমে রেমিট্যান্সও পাঠাতে পারবে, এ ব্যবস্থা করেছি। এ বিষয়ে বেসরকারি সিটি ব্যাংক আমাদের সহযোগিতা করেছে। পাশাপাশি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসীদের এত দিন যে ঋণ দিত,তাদের সঙ্গে দেশের বৃহৎ আরও১২ ব্যাংকও প্রবাসীদের ঋণ দেবে। সে বিষয়ে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। প্রবাসীদের অনেক বেশি ঋণের প্রয়োজন আছে। ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কথা বলে আমরা জেনেছি ঋণ দেওয়ার জন্য এক ধরনের গ্যারান্টির প্রয়োজন আছে, যেটা বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবস্থা করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি খুব দ্রুত এই ক্রেডিট গ্যারেন্টির বিষয়ে সমাধান হবে।
দেশের যেসব এলাকায় সোনালী ও অগ্রণী ব্যাংক আছে সেখানে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের বুথ স্থাপন করা হবে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের আরও কোনো শাখা না খুলে আমরা সোনালী ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকে প্রস্তাবনা দিয়েছি। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে যেসব জায়গায় সোনালী ও অগ্রণী ব্যাংক খাচ্ছে সেখানে গ্রাহকরা পরবাসী কল্যাণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা পাবে।
সাবএজেন্ট বা দালালদের রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়া হবে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের এজেন্ট যারা আছেন তাদের রেজিস্ট্রেশন আছে। তবে যারা দালাল ভদ্র ভাষায় সাবএজেন্ট তাদের জন্য রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা হবে। রেজিস্ট্রেশন করার মাধ্যমে তারা একটা জবাবদিহিতার মধ্যে থাকবে। যারা সদস্যরা আছেন তারা যদি আমাদের সহায়তা করে তাহলে এই সাবএজেন্টদের দৌরাত্ম্য আমরা কমাতে পারবো। এ দৌরাত্ম্য কমানো গেলে বিদেশে যাওয়ার যে অহেতুক টাকা দিতে হয় সেটা কমানো যাবে।
তিনি বলেন, রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে মূল্যায়ন করার জন্য মার্কিং বা ক্যাটাগরি করা হবে। যাতে করে তাদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। তারা যেন আরও ভালো করে কাজ করে। ফলে প্রবাসীদেরও সুবিধা হবে তারা ভালো রিক্রুটিং এজেন্সি বাছাই করতে পারবে। আমরা আশা করছি, এর মাধ্যমে ভোগান্তি অনেক কমবে।