দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:  ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ও তাঁর পরিবারের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবের তথ্য তলব করা হয়েছে। আজ রবিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) দেশের সব ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ও ডাক বিভাগের কাছে থাকা হিসাবের তথ্য জানতে চেয়েছে। সিআইসি সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

 

জানা গেছে, হারুন ছাড়াও তাঁর মা-বাবা, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে বা বোনের যৌথ নামে অথবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবের তথ্যও তলব করা হয়েছে

এর আগে হারুন ও তাঁর পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছিল বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। তাঁর দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে তত্পর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এবার কর ফাঁকি ধরতে মাঠে নামল সিআইসি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিআইসির একজন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ডিবি হারুনের বিপুল সম্পদ অর্জনের বিষয়টি আমাদের সামনে এসেছে, একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে যা তাঁর বৈধ আয়ের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।

বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থপাচার ও কর ফাঁকির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে ঢাকায় ডিবিপ্রধানের দায়িত্ব পালন করতেন হারুন। বিভিন্ন সময়ে তিনি আলোচিত হয়েছেন। সর্বশেষ কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে নেওয়ার পর তাঁকে নিয়ে সরব সমালোচনা হয়।

ওই সমন্বয়কদের মধ্যে প্রথমে তিনজনকে তুলে নেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে। এরপর বাকি তিনজনকে বিভিন্ন জায়গা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়

ডিবি হেফাজতে থেকে ছয় সমন্বয়ক এক ভিডিও বার্তায় কোটা আন্দোলনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওই দিনই ডিবি কার্যালয়ে ওই সমন্বয়কদের সঙ্গে এক টেবিলে বসে খাওয়ার বেশ কয়েকটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন হারুন। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে হাইকোর্টও এ বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন।

কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে ডিবির আচরণ নিয়ে সমালোচনার মধ্যে হারুনকে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) দায়িত্ব দেওয়া হয়। শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর হারুনকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। তাঁর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

বিতর্কিত এই পুলিশ কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরপরই বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুককে জাতীয় সংসদ এলাকায় মারধর করে আলোচনায় এসেছিলেন। এরপর যখন যেখানে দায়িত্ব পালন করেছেন, সেখানেই নানা অনিয়ম আর দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন। চাকরির প্রতিটি ধাপে প্রতারণা ও উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলেও তাঁকে কখনো শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়নি। উল্টো পুরস্কার হিসেবে পদোন্নতি ও গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে।